
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সংশ্লিষ্টদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা ছাড়াও তাঁর পরিবারের সদস্য, সহযোগী এবং দোসরদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস তাঁর সরকারের এই প্রতিশ্রুতির কথা জানান। তিনি বলেন, "মানবতাবিরোধী অপরাধ ও স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনা এবং তাঁর সহযোগীদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। আমরা নিশ্চিত করব যে শুধু তাঁকে নয়, তাঁর সঙ্গে জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তিই আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াবেন।"
ড. ইউনূস আরও উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণতন্ত্রের অবনতি এবং স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। তিনি বলেন, "একজন নেতা হিসেবে তাঁর দায়িত্ব ছিল জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষা করা। কিন্তু তিনি সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। বরং তাঁর শাসনামলে দেশে স্বৈরাচারী tendencies বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।"
তিনি আরও যোগ করেন, "আমাদের সরকারের লক্ষ্য হলো একটি জবাবদিহিমূলক ও স্বচ্ছ প্রশাসন গড়ে তোলা। আমরা নিশ্চিত করব যে অতীতের ভুলগুলো পুনরাবৃত্তি না হয় এবং যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত, তাদের কেউই রেহাই পাবে না।"
ড. ইউনূসের এই বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। শেখ হাসিনার সমর্থকরা এই অভিযোগগুলোকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলো ড. ইউনূসের এই প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়েছে এবং দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানিয়েছে।
এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে ড. ইউনূস বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আইনি ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনা ও তাঁর সহযোগীদের বিচারের মুখোমুখি করা হলে তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।
এই প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়াও গুরুত্বপূর্ণ। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বাংলাদেশে বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। ড. ইউনূসের সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপগুলোই নির্ধারণ করবে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় কতটা সফলতা অর্জিত হয়।
repoter