
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
আইটি খাতে অগ্রাধিকার, ব্যবসাকে রাজনীতির প্রভাবমুক্ত করার অঙ্গীকার বিএনপি নেতার
সিলেট, ২৮ জুন — বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি যদি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে, তবে ১৮ মাসের মধ্যে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। এ কর্মসংস্থানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতে, যেখানে ন্যূনতম এসএসসি পাস তরুণ-যুবকদের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করা হবে।
শনিবার সিলেটের জালালাবাদ গ্যাস অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘সিলেট বিজনেস ডায়ালগ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সিলেট ও জাতীয় অর্থনীতির বর্তমান চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা এবং সম্মিলিত অগ্রগতির রূপরেখা নিয়ে এই আলোচনার আয়োজন করা হয়।
আমীর খসরু বলেন, দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হলে ব্যবসাকে রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে। তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত একটি মুক্ত অর্থনীতিই দেশের সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে। ব্যবসার ক্ষেত্রে যেসব বাধা সৃষ্টি হয়েছে, তা ফ্যাসিবাদী শাসনের পরিণতি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি সরকার গঠন করলে ক্ষমতায় যাওয়ার প্রথম দিন থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একদিনও দেরি করা হবে না। যারা কৃষি খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, তাদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ও সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। কৃষিপণ্য বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্যে নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত সুবিধা দেওয়া হবে।
বিগত ১৭ বছরে দেশের অর্থনৈতিক সৃজনশীলতা ধ্বংস হয়েছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, এ সময়টিতে পরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতি ও শিল্প খাতকে রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্নীতির জালে জড়িয়ে ফেলা হয়েছে। আগের মতো পুরনো ধাঁচের রাজনীতি দিয়ে বর্তমান বাস্তবতায় দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। মানুষের চাহিদা ও মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে, সেই পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিয়ে নতুনভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। সঞ্চালনায় ছিলেন সিলেট মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার রিয়াসদ আজিম এবং কোষাধ্যক্ষ এনামুল কুদ্দুস চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি এস এম ফজলুল হক। আলোচনা পর্বে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্তরের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সিলেটের প্রবাসী নির্ভর অর্থনীতিকে আরও বিস্তৃত করতে হলে স্থানীয় শিল্প, কৃষি এবং তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক খাতকে প্রণোদনা ও সহায়তা দিতে হবে। তারা সরকার পরিবর্তনের পর সুশাসনের ভিত্তিতে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ চায়।
বক্তারা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ব্যবসার জন্য একটি স্থিতিশীল ও পূর্বানুমেয় পরিবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান, যাতে উদ্যোক্তারা নির্ভয়ে বিনিয়োগ করতে পারেন এবং তরুণরা কর্মসংস্থানের সুযোগ পান।
এই আয়োজনের মাধ্যমে সিলেট ও দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে ব্যবসায়ী মহলের মতামত ও প্রত্যাশার একটি স্পষ্ট চিত্র উঠে আসে। বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, আগামীতে একটি ব্যবসাবান্ধব ও গণতান্ত্রিক সরকার দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে পারবে।
repoter