
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
“ম্যাগাজিনটি ভুলক্রমে ব্যাগে ছিল, এটি একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল”— সচিবালয়ে কোর কমিটির বৈঠক শেষে মন্তব্য লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর
বিদেশ সফরের উদ্দেশ্যে বিমানবন্দরে প্রবেশের সময় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সঙ্গে অস্ত্রের খালি ম্যাগাজিন থাকার বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি যতটুকু জানি, তার (আসিফ মাহমুদ) ব্যাগে যে ম্যাগাজিনটি ছিল, সেটি একটি খালি পিস্তলের ম্যাগাজিন। ভুলক্রমে সেটা রয়ে গিয়েছিল। এটা তার ব্যক্তিগত অসাবধানতাজনিত ভুল। এমনটা অনেক সময় হয়— আপনি হয়তো চশমা নিতে গিয়ে ভুল করে অন্য কিছু নিয়ে ফেলেন।”
তিনি আরও বলেন, “যদি তিনি আগে থেকে জানতেন, তাহলে এমন জিনিস সঙ্গে করে নিতেন না। এটা অনিচ্ছাকৃত একটি ঘটনা।”
তবে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনায় আসে আরেকটি প্রশ্ন। সাংবাদিকরা জানতে চান, বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ন্যূনতম বয়স ৩০ বছর হওয়া বাধ্যতামূলক হলেও আসিফ মাহমুদের বয়স এখনো ৩০ হয়নি। তিনি কীভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স পেলেন?
এই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আমি ওই আইনটি খতিয়ে দেখিনি, তাই এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত কিছু বলতে পারব না। তবে যেহেতু বিষয়টি আলোচনায় এসেছে, নিশ্চয়ই বিষয়টি যাচাই করা হবে।”
একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া গুজব ও বিভ্রান্তি নিয়েও কথা বলেন তিনি। অনেকে বলছেন, আসিফ মাহমুদের কাছে একে-৪৭ ধরনের অস্ত্র ছিল। এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “কেউ কেউ বলছেন, তিনি একে-৪৭-এর লাইসেন্স পেয়েছেন। এটি একেবারেই ভুল তথ্য। তার কোনো একে-৪৭ নেই। তিনি যেটা ব্যবহার করেন, সেটা একটি বৈধ পিস্তল। যেটির একটি খালি ম্যাগাজিনই তার ব্যাগে ছিল।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, “নিরাপত্তার স্বার্থে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সঠিকভাবেই তল্লাশি করেছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এ ধরনের ঘটনার পর নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত হবে এবং যেটুকু প্রয়োজন, সেটুকু আইনগতভাবে নিশ্চিত করা হবে।”
উল্লেখ্য, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বর্তমানে সরকারি সফরে বিদেশে রয়েছেন। তিনি এর আগে একাধিকবার নিজের লাইসেন্সধারী অস্ত্র থাকার কথা গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন, দাবি করেছিলেন ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ অস্ত্র রাখা তার বাধ্যতামূলক সিদ্ধান্ত ছিল।
তবে তার বয়স ও লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্যতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও অস্ত্র আইন সবার জন্য সমভাবে প্রযোজ্য হওয়া উচিত। পাশাপাশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে তদন্ত হওয়া জরুরি।
repoter