ঢাকা,  শুক্রবার
১৮ এপ্রিল ২০২৫ , ০৯:০৮ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে কঠিন হবে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য * আলোচনায় অসন্তুষ্ট কারিগরি শিক্ষার্থীরা, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা * চীন থেকে অর্থ আনার অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগে এনবিআরের দুই কর্মকর্তা বাধ্যতামূলক অবসরে * ঢাকার চারপাশে গড়ে উঠছে ব্লু নেটওয়ার্ক: পানি সম্পদ উপদেষ্টা * বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা * গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বাড়ালেও সরবরাহ সংকট ও চুরি কমেনি * দেশজুড়ে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস, কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা * ২১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশে * মাত্র ৮ দিনের মাথায় জামিনে মুক্ত ‘ডন মাসুদ’, এলাকায় ফের আতঙ্কের ছায়া * প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি প্রতিনিধি দল

অস্থিরতা ও অসন্তোষের মধ্যেও পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি ১৩.২৮%

repoter

প্রকাশিত: ০৭:৩৮:০২পূর্বাহ্ন, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫

আপডেট: ০৭:৩৮:০২পূর্বাহ্ন, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

অস্থিরতা ও রাজনৈতিক ডামাডোলের ছায়ায়ও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত রফতানিতে স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) দেশে তৈরি পোশাক রফতানির আয় হয়েছে ১ হাজার ৯৮৮ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগের বছরের একই সময়ে রফতানি আয় ছিল ১ হাজার ৭৫৫ কোটি ৬৯ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ, রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ২৮ শতাংশ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। জানা গেছে, এ প্রবৃদ্ধির পেছনে চীন থেকে সরিয়ে আনা ক্রয়াদেশের বড় অবদান রয়েছে। মার্কিন ক্রেতারা ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ক্রয়াদেশ চীন থেকে বাংলাদেশে সরিয়ে আনছেন। এতে বাংলাদেশের পোশাক রফতানিকারকদের কাজের চাপ বাড়লেও রফতানিতে ভালো ফল পাওয়া গেছে।

গত ছয় মাসে শিল্পাঞ্চলগুলোতে নানা ধরনের শ্রম অসন্তোষ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা লক্ষ্য করা গেছে। জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কারণে শিল্প এলাকাগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হয়। আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে শিল্পাঞ্চলগুলোতে নিয়মিত বিরতিতে অস্থিরতা দেখা দেয়। মজুরি এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ বেড়ে যায়। এর ফলে কিছু কারখানায় উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হলেও বেশিরভাগ কারখানা ক্রয়াদেশ মেটাতে সক্ষম হয়েছে।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে দেশের মোট রফতানি আয় হয়েছে ২ হাজার ৪৫৩ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। এর মধ্যে ৮১ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। পোশাক ছাড়াও চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষিপণ্য, হোম টেক্সটাইল এবং পাট ও পাটজাত পণ্য প্রধান রফতানি পণ্য হিসেবে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।

দেশের অন্যতম বৃহৎ পোশাক রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ জব্বার বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও আমরা ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি। চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে বৈশ্বিক ক্রেতারা বাংলাদেশমুখী হচ্ছে। যদিও শ্রম অসন্তোষ এবং উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা ছিল, তবে চীন থেকে সরিয়ে আনা ক্রয়াদেশের জন্য প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, পোশাক খাতের উদ্যোক্তা ও শ্রমিকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে এ সফলতা এসেছে। তবে রফতানি আয় বাড়লেও উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। ফলে মুনাফা তুলনামূলক কম।

অন্যদিকে, চীন থেকে সরিয়ে আনা ক্রয়াদেশ ধরা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এইচঅ্যান্ডএমের বাংলাদেশ কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউর রহমান বলেন, চীন থেকে সরিয়ে আনা ক্রয়াদেশের কারণে রফতানিতে ভালো প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। বাংলাদেশ এখনও এই বাজার ধরে রাখতে সক্ষম।

তবে শিল্পাঞ্চলের অস্থিরতার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উদ্যোক্তারা। বিজিএমইএ-এর সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা গেলে পোশাক খাত আরও এগিয়ে যাবে। ভূরাজনৈতিক কারণেই বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতি ক্রেতাদের ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে। তবে স্থায়িত্ব বজায় রাখা এখন চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশের পোশাক রফতানি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও অর্থপ্রবাহের সঙ্কট, উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি এবং শ্রম অসন্তোষ বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, সঠিক নীতিসহায়তা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা গেলে পোশাক খাত আন্তর্জাতিক বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান অর্জন করতে সক্ষম হবে।

repoter