
ছবি: পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। ছবি: সংগৃহীত
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সফরে আসছেন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সফর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
২০১২ সালের পর এই প্রথম কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর হতে যাচ্ছে। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, ২০১২ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার ডি-এইট সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকা এসেছিলেন। দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় পর এই সফর নতুন এক যুগের সূচনা ঘটাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। ছাত্র ও জনতার গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারত চলে যান। এর পর থেকেই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্কের উন্নয়নের নতুন অধ্যায় শুরু হয়।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানির বেশ কয়েকটি বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করেছে। পাশাপাশি সমুদ্রপথে সরাসরি বাণিজ্য শুরু হয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে।
ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসহাক দার বলেন, বাংলাদেশ আমাদের হারিয়ে যাওয়া ভাই। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে পাকিস্তান সব ধরনের সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত। তিনি আরও উল্লেখ করেন, পাকিস্তান এখন অর্থনৈতিক কূটনীতি অনুসরণ করছে এবং এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চায়।
ইসহাক দার তার ঢাকা সফরের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান একসঙ্গে কাজ করলে উভয় দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো জোরদার হবে। তার মতে, পারস্পরিক সমর্থন এবং সহযোগিতা ভবিষ্যতের উন্নয়নের পথকে মসৃণ করবে।
এই সফরের পেছনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকা রয়েছে। তিনি কায়রোতে ইসহাক দারকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। একইসঙ্গে পাকিস্তানের আমন্ত্রণে মুহাম্মদ ইউনূস ইসলামাবাদ সফরে যাবেন। দুই দেশের কর্মকর্তারা যৌথ আলোচনার মাধ্যমে সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবেন।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৫ বছরের শাসনামলে শেখ হাসিনা পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে তেমন গুরুত্ব দেননি। বরং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তবে গত বছরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দুই দেশের সম্পর্ক দৃশ্যমান উন্নতি লাভ করেছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফর দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
repoter