ঢাকা,   বুধবার
২ এপ্রিল ২০২৫ , ১২:৩৭ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ রবিবার * প্রতিযোগী না হয়ে প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতিই নিজেদের: পঞ্চগড়ে সারজিস আলম * জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবারদের পাশে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক * ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল * শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে রবিবার ঈদ উদযাপিত হবে * “বাংলাদেশ কোরআনের উর্বর ভূমি” — পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায় ধর্ম উপদেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা * চা শ্রমিকদের পাশে সিলেটের ডিসি — দুর্দশায় ত্রাণ নিয়ে হাজির প্রশাসন * সাত বছর পর পরিবারের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপন করছেন খালেদা জিয়া * মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা * আগামীকাল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ২ ঘণ্টার লেনদেন

চা শ্রমিকদের পাশে সিলেটের ডিসি — দুর্দশায় ত্রাণ নিয়ে হাজির প্রশাসন

repoter

প্রকাশিত: ০৯:১৭:৩৭অপরাহ্ন , ২৮ মার্চ ২০২৫

আপডেট: ০৯:১৭:৩৭অপরাহ্ন , ২৮ মার্চ ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের চা-বাগানগুলোতে কয়েক মাস ধরে চলমান আর্থিক সংকটে চরম দুর্ভোগে পড়েছিলেন হাজারো শ্রমিক পরিবার। দীর্ঘ ১৫ থেকে ১৭ সপ্তাহ ধরে বেতন ও রেশন না পাওয়ায় মানবেতর দিন কাটছিল চা শ্রমিকদের। অবশেষে এই সংকটময় মুহূর্তে তাদের পাশে দাঁড়ালেন সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকেলে ডিসির একান্ত প্রচেষ্টায় সদর উপজেলার চারটি চা বাগানের ১,৪০০ শ্রমিকের মাঝে ত্রাণ হিসেবে নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। বুরজান, কালাগুল, ছেড়াগাং এবং ফ্যাক্টরি চা বাগানের শ্রমিকদের মাঝে জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে মোট ৭ লাখ টাকা এবং ১০ কেজি করে চাল (মোট ১৪ মেট্রিক টন) বিতরণ করা হয়।

এই সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজ খোশনূর রুবাইয়াৎ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাহবুবুল ইসলাম, এসিল্যান্ড মো. আলীম উল্লাহ খান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মেরিনা দেবনাথ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শীর্ষেন্দু পুরকায়স্থ এবং খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিলোয়ার হোসেন।

চা শ্রমিকদের দীর্ঘদিন ধরে দাবিকৃত বকেয়া বেতন ও রেশন না পাওয়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আসার পরপরই তিনি বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে ত্রাণ সহায়তার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে চা শ্রমিকদের সহায়তা দেয়ার এই উদ্যোগে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে শ্রমজীবী পরিবারগুলো।

সহায়তা পেয়ে এক চা শ্রমিক আনন্দে বলেন, “আমাদের ডিসি স্যার টেকা আর চাউল দিছে। আমরা অনেক কষ্টে ছিলাম, এখন অনেক খুশি।”
আরেকজন বলেন, “বাচ্চাদের মুখে হাসি ফিরেছে। এতদিন পর ভালো লাগছে।”

ইউএনও মিজ খোশনূর রুবাইয়াৎ বলেন, “সাময়িকভাবে হলেও এই সহায়তা চা শ্রমিকদের কিছুটা কষ্ট লাঘব করবে। জনপ্রতি ৫০০ টাকা ও ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভবিষ্যতেও সহায়তা অব্যাহত থাকবে।”

চা শিল্প বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হলেও, এই শিল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারিগর — চা শ্রমিকরা — বারবার অবহেলার শিকার হয়ে আসছেন। বেতন-রেশন বন্ধ থাকায় চা বাগানগুলোর শ্রমিকরা চরম খাদ্য সংকটে ভুগছিলেন। তাদের অনেকেই নিরুপায় হয়ে ধারদেনায় দিন চালাচ্ছিলেন।

জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ প্রশংসা কুড়িয়েছে সর্বমহলে। স্থানীয় সমাজকর্মীরা বলছেন, প্রশাসনের মানবিক ভূমিকা সময়োচিত এবং তা আরও বিস্তৃত হওয়া দরকার। পাশাপাশি তারা চা বাগানের মালিকপক্ষ ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি দ্রুত শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ এবং নিয়মিত রেশন সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছেন।

অর্থনৈতিক চাপে বিপর্যস্ত চা শ্রমিকদের মুখে অস্থায়ী হলেও হাসি ফিরেছে জেলা প্রশাসনের এই আন্তরিক প্রচেষ্টায়। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য চা শিল্পের টেকসই ব্যবস্থাপনা, শ্রমিকদের সুরক্ষা এবং ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

এই ত্রাণ কার্যক্রম যেন শুধু সাময়িক স্বস্তির নিদর্শন না হয়ে, ভবিষ্যতের জন্য একটি দায়িত্বশীল প্রশাসনিক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে — সেটাই চায় দেশের চা শ্রমিক সমাজ।

repoter