ছবি: ক্যাম্পাসে আসা এসব বহিরাগতকে বিতাড়িত করে ঢাবি শিক্ষার্থী ও পুলিশ
রাজধানীর শাহবাগে ডাকা একটি সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে আগত বহিরাগতদের বিতাড়িত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, শিক্ষার্থীরা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রোববার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাস, মাইক্রোবাস এবং প্রাইভেটকারে শত শত লোক ঢাবি ক্যাম্পাসে এসে অবস্থান নিতে শুরু করে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি, মোবাইল টিম এবং শিক্ষার্থীদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বহিরাগতদের সরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কয়েকজনকে আটক করে, যাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অস্থিতিশীলতা তৈরির পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রক্টরিয়াল টিম বহিরাগতদের কাছ থেকে প্রচারপত্রসহ বিভিন্ন কাগজপত্র জব্দ করে। "অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ" নামক একটি প্ল্যাটফর্মের প্রচারপত্রে দাবি করা হয়, “অবৈধ অর্থ উদ্ধার ও গণমুখী বিনিয়োগ জাতীয় সংস্থা” শিরোনামে দুর্নীতিবিরোধী একটি আইন প্রণয়নের দাবিতে সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে। এতে বলা হয়, “বিনা সুদে, বিনা জামানতে এক লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত পুঁজি দেওয়ার” প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
অনেকে অভিযোগ করেন, সমাবেশে সাধারণ মানুষকে নিয়ে আসার জন্য এই ধরনের লোভনীয় প্রতিশ্রুতি ব্যবহার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এটিকে "গভীর ষড়যন্ত্র" হিসেবে দেখছেন।
ঢাবির শিক্ষার্থী আসিফ রহমান বলেন, “আমরা কয়েক মিনিটের মধ্যেই টিএসসি এলাকা বহিরাগতমুক্ত করেছি এবং তাদের যানবাহনগুলো সরিয়ে দিয়েছি। পুলিশ কয়েকজনকে আটক করেছে।”
আরেক শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান সাকিব বলেন, “রাত থেকেই বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে থাকে। সকালে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে গেলে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। আমি মনে করি, এটি দেশকে অস্থিতিশীল করার একটি পরিকল্পনার অংশ।”
ঢাবির প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ জানান, “ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আগমনের পর থেকে প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিম কাজ করছে। ভোর রাত থেকেই আমাদের সহকারী প্রক্টর এবং পুলিশের একটি বড় টিম মিলে এই পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। সকলের সহযোগিতায় ক্যাম্পাস বহিরাগতমুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।”
জব্দ করা প্রচারপত্রে দাবি করা হয়, "দুর্নীতিবিরোধী আইন প্রণয়ন ও অর্থনৈতিক মুক্তির" লক্ষ্যে গণজমায়েতের আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে ক্যাম্পাসে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি একটি চক্রের ষড়যন্ত্র, যা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় এনেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় ঢাবি ক্যাম্পাস ও শাহবাগ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
repoter