ছবি: চিন্ময় কৃষ্ণ দাস।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর ও কারাগারে পাঠানোর পর চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর হামলা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা দেয়ার মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া তার ১২ অনুসারীর ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতের রায়ের পর চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রিমান্ডে থাকা ১২ আসামির মধ্যে রয়েছেন— আমান দাস, রুমিত দাস, নয়ন দাস, গগন দাস, সুমিত দাস, বিশাল দাস, সনু দাস মেথর, সুমন দাস, রাজেশ দাস, দুর্লভ দাস, জয় নাথ এবং অজয় সূত্রধর চৌধুরী।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর ও পুলিশি হামলা
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র, ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম আদালত থেকে জামিন নাকচ হয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। জামিন বাতিলের পরপরই, চিন্ময় অনুসারীরা চট্টগ্রামের নিউমার্কেট এলাকায় আন্দোলন শুরু করেন এবং সেখানে পুলিশের ওপর হামলা করেন। তারা পুলিশি ভ্যানে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বাধা দেয়।
এসময় চিন্ময়ের অনুসারীরা পুলিশের বিভিন্ন গাড়ি এবং অন্তত ২০টি সাংবাদিকের গাড়ি ভাঙচুর করেন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ২০ জন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে চিন্ময় দাসের অনুসারীরা আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করেন। সাইফুল ইসলামের মৃত্যুতে তার পরিবার পুলিশের কাছে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে সংঘর্ষ, ৩৯ গ্রেপ্তার
চিন্ময়ের অনুসারীদের হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৫টি মামলা দায়ের করেছে। এর মধ্যে তিনটি মামলা পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে। আর দুটি মামলা সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায়, যেখানে তার বাবা জামাল উদ্দিন ও ভাই পৃথকভাবে ৩১ ও ১১৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন।
এ পর্যন্ত এই ঘটনায় ৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ১২ জনকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এই হামলার কারণে চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং পুলিশের ওপর হামলা ও বিক্ষোভের ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যায়।
চিন্ময় অনুসারীদের বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপ
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীরা পরিস্থিতি সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অগ্রসর হতে বাধা প্রদান করেন, যার ফলে পুলিশকেও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয়। পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইন প্রয়োগ করে এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের বিচারও সামনে এসেছে।
এই ঘটনায় পুলিশ, আইনজীবী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রামের পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় জনগণ তাদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত, বিশেষত এই হামলার পর।
এদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের গ্রেপ্তার ও রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার পর আইনজীবী ও সুশীল সমাজের সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তারা দাবি করছেন, এই ধরনের সহিংসতা আইনসম্মতভাবে মোকাবিলা করতে হবে এবং অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।
repoter