
ছবি: ছবি- বাসস
বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই অনুষ্ঠানে তিনি ধর্মীয় শান্তির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন এবং সকল ধর্মের শান্তির বাণীকে নিজেদের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু আর্চবিশপ বিজয় এন ডি'ক্রুজ, দ্য ন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান ফেলোশিপ অব বাংলাদেশের সভাপতি বিশপ ফিলিপ পি অধিকারী, বাংলাদেশ ক্রিশ্চিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, মহাসচিব ইগ্লাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া এবং বাংলাদেশ খ্রিস্টান মহাজোটের প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নির্মল ডি' কস্তা।
ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশে উদারতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
আর্চবিশপ বিজয় এন ডি'ক্রুজ তার বক্তব্যে যিশু খ্রিষ্টের শান্তির বাণী এবং আদর্শের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, "বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস একজন সৎ ও জ্ঞানী ব্যক্তি, যিনি দেশে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ এবং অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন। আমরা প্রার্থনা করি যে, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশে ভালোবাসা, মানবপ্রেম, ভ্রাতৃত্ববোধ ও ক্ষমাশীলতা গড়ে উঠুক। খ্রিষ্টান সম্প্রদায় সর্বদা তার পাশে থাকবে।"
এ সময় তিনি বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্ট্রান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে আড়াই কোটি টাকা অনুদান দেয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানান। এই অনুদান দেশের বিভিন্ন চার্চে বিতরণ করা হয়েছে বলে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ জানান।
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আজকের দিনে আপনাদের সঙ্গে দেখা হয়ে আমি অত্যন্ত খুশি। আমরা সবাই এক পরিবার, একত্রে থাকতে চাই। এই দেশ সকলের জন্য, আমরা সবাই মিলেমিশে বসবাস করব। এটা আমাদের স্বপ্ন।” তিনি আরও বলেন, “ধর্মীয় সংহতি চাই, সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগরিষ্ঠ এই শব্দগুলো আমরা চাই না। আমরা সবাই মানুষ, আমাদের পরিচয় আগে মানুষ, তারপর ধর্ম।”
তিনি ধর্মীয় শান্তির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “প্রত্যেক ধর্মেই শান্তির বাণী আছে। আমাদের নিজেদের মধ্যে সেই শান্তির বাণী স্থাপন করতে হবে। যদি আমরা নিজ নিজ ধর্মের শান্তির বাণী আমাদের মধ্যে স্থাপন করতে পারি, তাহলে অন্য ধর্মের মধ্যেও সেই শান্তি খুঁজে পাব। তখন আর ধর্মীয় বিভেদ থাকবে না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা সুন্দর শৈশব পাবে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
repoter