ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৩ এপ্রিল ২০২৫ , ০২:৪৭ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ রবিবার * প্রতিযোগী না হয়ে প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতিই নিজেদের: পঞ্চগড়ে সারজিস আলম * জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবারদের পাশে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক * ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল * শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে রবিবার ঈদ উদযাপিত হবে * “বাংলাদেশ কোরআনের উর্বর ভূমি” — পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায় ধর্ম উপদেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা * চা শ্রমিকদের পাশে সিলেটের ডিসি — দুর্দশায় ত্রাণ নিয়ে হাজির প্রশাসন * সাত বছর পর পরিবারের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপন করছেন খালেদা জিয়া * মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা * আগামীকাল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ২ ঘণ্টার লেনদেন

২০২৪ হবে পৃথিবীর উষ্ণতম বছর: ইইউ জলবায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থা

repoter

প্রকাশিত: ০৭:৫৮:৩৫অপরাহ্ন , ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০৭:৫৮:৩৫অপরাহ্ন , ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থা কপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস জানিয়েছে, ২০২৪ সাল হবে ইতিহাসের উষ্ণতম বছর। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সংস্থাটি তাদের মাসিক বুলেটিনে জানিয়েছে, প্রাক-শিল্প সময়ের তুলনায় চলতি বছর গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হবে। সংস্থার মতে, এই পরিস্থিতি কার্যত নিশ্চিত এবং বিশ্বকে বিপজ্জনক অতিরিক্ত উত্তাপ থেকে রক্ষা করা জরুরি।

প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্বের দেশগুলো তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। তবে, কপার্নিকাসের উপ-পরিচালক সামান্থা বার্গেস জানিয়েছেন, একটি বছরে এই তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়া মানে প্যারিস চুক্তি লঙ্ঘন নয়। এটি বরং আরও উচ্চাভিলাষী ও কঠোর জলবায়ু পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।

বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, তাপমাত্রার এই বৃদ্ধি চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলিকে আরও ঘন ঘন ও মারাত্মক করে তুলবে। ২০২৪ সালেই এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে—স্পেন ও কেনিয়ায় ভয়াবহ বন্যা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়, দক্ষিণ আমেরিকায় তীব্র খরা ও দাবানল।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর মহাসাগর ও বায়ুমণ্ডল উষ্ণ হয়ে উঠছে। জীবাশ্ম জ্বালানির অতিরিক্ত ব্যবহার গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকে ত্বরান্বিত করছে, যা জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক চক্রকে ব্যাহত করছে। বিশ্বব্যাপী কয়লা, তেল ও গ্যাসের ব্যবহার হ্রাস করার প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও, এ থেকে নির্গমনের মাত্রা বেড়েই চলেছে।

এদিকে, জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত বৈঠকে ধনী দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বছরে ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে বিজ্ঞানীদের মতে, ২০৩৫ সালের মধ্যে এই সহায়তার প্রয়োজন হবে বছরে ১.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বিমা জায়ান্ট সুইস রে জানিয়েছে, ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ৩১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর ফলে বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমানে পৃথিবী ১২৫,০০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ সময় অতিক্রম করছে। ২০২৪ সাল এল নিনো প্রাকৃতিক প্রভাবের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এই প্রভাব বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এল নিনো একা এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ হতে পারে না।

আইপিসিসি-র বিজ্ঞানী রবার্ট ভাটার্ড উল্লেখ করেছেন যে, এল নিনো শেষ হওয়ার পর তাপমাত্রা কমার গতি অত্যন্ত ধীর। এর কারণ বিশ্লেষণ করা জরুরি। তিনি আরও বলেছেন, জাহাজের জ্বালানি মেঘের মধ্যে আয়নার মতো কণা নির্গমন কমিয়েছে, যা জলবায়ুর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

কপার্নিকাসের বিজ্ঞানী জুলিয়ান নিকোলাস জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোর অস্বাভাবিক তাপমাত্রা নজিরবিহীন। তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে বুঝতে এবং ভবিষ্যতে প্রস্তুতি নিতে আমরা যত বেশি তথ্য সংগ্রহ করতে পারি, ততই লাভবান হব।

বিশ্বজুড়ে এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব মোকাবিলা করতে বিজ্ঞানীরা দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক প্রচেষ্টা আরও জোরদার না করলে ভবিষ্যতের জন্য এটি বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

repoter