ঢাকা,  শুক্রবার
৯ মে ২০২৫ , ০২:০৩ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* ড্রোন হামলায় স্থগিত পিএসএলের ম্যাচ, আতঙ্কে বিদেশি ক্রিকেটাররা * পিলখানা হত্যাকাণ্ড: তাপসের নেতৃত্বে মিটিং, নানক-আজমসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্পৃক্ততার দাবি * ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বাসের ধাক্কায় অ্যাম্বুলেন্সে থাকা একই পরিবারের ৪ জনসহ নিহত ৫ * উত্তেজনার জেরে ভারত-পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন, লেনদেন বন্ধ * রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতায় নিয়ন্ত্রণ আনতে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব * সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগ: দায়িত্বে অবহেলায় পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা * ইতিহাসের সর্বোত্তম নির্বাচন উপহার দেবে অন্তর্বর্তী সরকার: প্রধান উপদেষ্টা * রাজশাহীর দুটি জলাভূমিকে ‘জলাভূমি নির্ভর প্রাণী অভয়ারণ্য’ ঘোষণা * ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় আইপিএলের ভেন্যু বদল, ধর্মশালার পরিবর্তে ম্যাচ হবে মুম্বাইয়ে * ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে উত্তপ্ত উপমহাদেশ, শান্তির আহ্বান তারেক রহমানের

সয়াবিন তেলের দাম লিটারে বাড়ল ১৪ টাকা, বোতলজাত ও খোলা তেলের নতুন দর কার্যকর

repoter

প্রকাশিত: ১০:৩৯:০০অপরাহ্ন , ১৩ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ১০:৩৯:০০অপরাহ্ন , ১৩ এপ্রিল ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

সয়াবিন তেলের দাম আবারও বাড়ানো হয়েছে। এবার প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে ১৪ টাকা। নতুন দাম অনুযায়ী, এখন থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে ক্রেতাদের গুণতে হবে ১৮৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৭৫ টাকা। রোববার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনষ্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায়। সংগঠনটি জানায়, ঘোষণার পর থেকেই নতুন দাম কার্যকর হয়েছে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাঁচ লিটারের বোতলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা, যা আগে ছিল ৮৫২ টাকা। একই সঙ্গে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দামও বাড়ানো হয়েছে। নতুন দরে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম এখন প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৫৭ টাকা। এর আগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন প্রতি লিটারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৭৫ টাকা।

জানা যায়, আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে গত ২৭ মার্চ মিলমালিকেরা ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। তারা বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৩ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। এর ঠিক পরদিন ১ এপ্রিল থেকে এই নতুন দর কার্যকরের ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা।

মূল্য বৃদ্ধির কারণ হিসেবে মিল মালিকরা আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে ভোজ্যতেলে দেওয়া কর-সুবিধার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়াকে দায়ী করেন। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়। এরপর থেকেই সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে কয়েক দফা আলোচনা ও দর-কষাকষি চলতে থাকে।

সরকার গত রমজানের আগে ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ও শুল্কে ছাড় দিয়েছিল। কিন্তু সেই সুবিধার মেয়াদ ৩১ মার্চ শেষ হয়ে যায়। এর ফলে আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে আবারও আদর্শ হারে ভ্যাট আরোপ শুরু হয়। ব্যবসায়ীদের দাবি, এই নতুন কর কাঠামোর কারণে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি করা ছাড়া তাদের বিকল্প নেই।

পরে ঈদের ছুটির পর বৈঠকের মাধ্যমে দাম নির্ধারণে আবারও আলোচনা শুরু হয়। গত সপ্তাহের রবিবার, মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার একাধিক বৈঠকে বসেন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো। আলোচনায় বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৯০ টাকার বেশি হবে নাকি কম, তা নিয়ে দীর্ঘ দর-কষাকষি হয়। তবে ওই সময় পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

অন্যদিকে, ব্যবসায়ীদের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের আগেই বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন আমদানি পর্যায়ে শুল্ক ছাড়ের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দেয়। তবে এখন পর্যন্ত এনবিআর এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনষ্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন তাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ভোক্তাদের সহনশীলতার কথা বিবেচনায় রেখে সরকার আগে যে কর ছাড় দিয়েছিল, তা না থাকায় নতুন করে আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে পূর্ণ ভ্যাট আরোপ করতে হচ্ছে। এর ফলে প্রকৃতপক্ষে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের মূল্য দাঁড়ায় ১৯৮ টাকা। তবে ভোক্তা স্বার্থে সেখান থেকে ৯ টাকা ছাড় দিয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮৯ টাকা।

সংগঠনটি আরও জানায়, সরকার পূর্বে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সয়াবিন তেল এবং পাম তেল আমদানির উপর আরোপিত মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছিল এবং স্থানীয় উৎপাদন ও বিপণন পর্যায়েও ভ্যাট অব্যাহতি দিয়েছিল। তবে সেই সুবিধার মেয়াদ গত ৩১ মার্চ শেষ হওয়ায় বর্তমান দামে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

সবশেষে, ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি ও সরকারের ভ্যাট সুবিধার অবসান—এই দুইয়ের সম্মিলিত প্রভাবেই ভোজ্যতেলের বাজারে এই নতুন দাম নির্ধারণ করতে বাধ্য হয়েছেন তারা। তারা দাবি করছেন, নতুন এই মূল্য হারে তারা ভোক্তাদের জন্য সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করেছেন এবং ভবিষ্যতে পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

repoter