
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনা যুদ্ধে রূপ নেওয়ার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ফেসবুক পোস্টে এ ধরনের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং সংঘাত নিরসনে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “যেহেতু আশপাশে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই আমরা সামরিক হামলার নিন্দা জানাই এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আমরা সংশ্লিষ্ট সকলকে সংযম প্রদর্শন এবং সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই। অভিন্ন স্বার্থ এবং আকাঙ্ক্ষার ওপর নির্মিত একটি স্থিতিশীল এবং শান্তিপূর্ণ অঞ্চল সকলের সর্বোত্তম স্বার্থে কাজ করে।”
তার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়েছে, কারণ এই সংঘাত দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে শঙ্কা সৃষ্টি করেছে।
গত দুই সপ্তাহ ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছিল। কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা চললেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় মঙ্গলবার দিবাগত রাতে। দুই দেশের মধ্যে শুরু হয় সরাসরি সামরিক হামলা, যা যুদ্ধের রূপ নেয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সংঘাতে পাকিস্তানে ২৬ জন এবং ভারতে ৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও উভয় পক্ষের বহু মানুষ আহত হয়েছেন ও ঘরবাড়ি হারিয়েছেন।
সংঘাতের ফলে সীমান্ত এলাকার হাজার হাজার মানুষ নিরাপত্তার জন্য বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। উভয় দেশের সামরিক বাহিনী প্রস্তুত অবস্থানে রয়েছে এবং দুই পক্ষ থেকেই পাল্টাপাল্টি অভিযানের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ ঘটনার উপর নজর রাখছে এবং অনেক রাষ্ট্রই সংযম ও কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য আঞ্চলিক সংস্থাগুলোও শান্তি স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
তারেক রহমানের এই বক্তব্যকে বিএনপির শান্তিপ্রিয় অবস্থানের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, “একটি নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল অঞ্চল গঠনে সব পক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন। এ ধরনের সংঘাত শুধু একটি বা দুটি দেশের ক্ষতি করে না, বরং গোটা অঞ্চলের শান্তি ও উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়।”
বিএনপি নেতার এই বার্তাটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন পুরো দক্ষিণ এশিয়া এক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে এবং জনমনে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তার বক্তব্য বর্তমান প্রেক্ষাপটে দায়িত্বশীল নেতৃত্বের পরিচায়ক, যা শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করতে পারে।
আন্তর্জাতিক কূটনীতিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ ঘটনার দ্রুত শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছে। তারা বলছে, সামরিক উত্তেজনা যত দীর্ঘায়িত হবে, ততই তা মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এমন উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক নতুন নয়, তবে এই ধরনের সরাসরি সামরিক হামলা গোটা অঞ্চলকে এক গভীর সংকটে ফেলতে পারে। উভয় দেশের পারমাণবিক অস্ত্র থাকার বিষয়টি এই পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলছে।
এই পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের উচিত সংযম প্রদর্শন করা এবং অবিলম্বে সংঘাত বন্ধ করে কূটনৈতিক টেবিলে ফিরে আসা। মানুষের প্রাণ, সম্পদ এবং অঞ্চলের স্থিতিশীলতার কথা বিবেচনায় রেখে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা এখন সবচেয়ে জরুরি।
তারেক রহমানের আহ্বান, এই সংকটময় সময়ে মানবতা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মূল্যবোধকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। সংঘাত নয়, সংলাপের মাধ্যমেই টেকসই সমাধান সম্ভব।
repoter