
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘ চার মাস চিকিৎসা শেষে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছান তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন বড় পুত্র তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান এবং ছোট পুত্র প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান। বিএনপির মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে তাকে বহনকারী কাতারের রাজপরিবারের একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে তিনি নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস ও আবেগময় পরিবেশে গুলশানের বাসভবনের পথে যাত্রা করেন।
বেগম জিয়া তার দীর্ঘদিনের ব্যবহৃত নিশান পেট্রোল গাড়ির সামনের আসনে বসেন, আর তার পেছনে ছিলেন দুই পুত্রবধূ। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সোমবার (৫ মে) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি। পথে কাতারের রাজধানী দোহায় হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ঘণ্টার বিরতি নেয় বিমানটি এবং সেখানে জ্বালানি নেওয়া হয়।
খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিমানবন্দর ও গুলশান এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কিছু নির্দেশনাও জারি করে, যাতে ফিরোজায় তার আগমন নির্বিঘ্ন হয়।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং আর্থ্রাইটিসসহ একাধিক শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এর আগে তিনি দীর্ঘ সময় কারাবন্দি ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে।
সে সময়ে তার পরিবার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার অনুমতি চাইলেও সরকার তা অগ্রাহ্য করে, ফলে চিকিৎসার ধারাবাহিকতা ব্যাহত হয়। তবে সম্প্রতি ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে আওয়ামী সরকারের পতনের পর দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়েছে বলে বিএনপি নেতারা দাবি করেছেন।
বর্তমানে খালেদা জিয়া আইনি প্রক্রিয়ায় নিজ বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মামলার মোকাবিলা করছেন। দেশের উচ্চ আদালত ইতোমধ্যে পূর্ববর্তী সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর অনেককেই হয়রানিমূলক হিসেবে চিহ্নিত করেছে বলে জানা গেছে।
দেশে ফেরার পর রাজনৈতিক ও পারিবারিক পরিমণ্ডলে বেগম জিয়ার সক্রিয় উপস্থিতি নতুনভাবে বিএনপির রাজনীতিতে গতি আনবে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
repoter