
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় একটি অ্যাম্বুলেন্সকে পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই একজন নারী এবং পরে হাসপাতালে আরও চারজন নিহত হন। বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুর পৌনে ১টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার নিমতলা তালুকদার পাম্পের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা অভিমুখী একটি অ্যাম্বুলেন্সের চাকা পাংচার হয়ে যাওয়ায় সেটি এক্সপ্রেসওয়ের পাশে তালুকদার পাম্পের সামনে থেমে ছিল। ওই সময়ে একই দিকে আসা গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পেছন থেকে অ্যাম্বুলেন্সটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই অ্যাম্বুলেন্সে থাকা প্রায় ৩৫ বছর বয়সী এক নারী নিহত হন।
এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন আরও পাঁচজন, যাদের মধ্যে ছিলেন দুই নারী ও তিন পুরুষ। আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে তিনজন নারী ও দুইজন পুরুষ রয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে চারজন একই পরিবারের সদস্য বলে জানা গেছে। এরা হলেন—আব্দুস সামাদ ফকির, তার ছেলে বিল্লাহ ফকির, মেয়ে আফসানা এবং অ্যাম্বুলেন্স চালক। অপর এক নারী নিহতের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় হাসারা হাইওয়ে থানার পুলিশ। থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী সাংবাদিকদের জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। বাকিদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্সটির গায়ে তেমন ক্ষয়ক্ষতি দেখা যায়নি, তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে—দুর্ঘটনার সময় যাত্রীরা অ্যাম্বুলেন্সের বাইরে, পেছনে অবস্থান করছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে পেছন থেকে আসা বাসটি সজোরে ধাক্কা দিলে তারা প্রাণ হারান।
গোল্ডেন লাইন পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি ঘটনাস্থলেই আটক করা হয়েছে। চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। দুর্ঘটনার ফলে সড়কে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই দুর্ঘটনাটি আবারও দেশের সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা ও দ্রুতগতির যানবাহনের ঝুঁকি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। নিহতদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে, এবং স্থানীয় এলাকায়ও শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।
repoter