
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগকে কেন্দ্র করে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিনজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (আজ) পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ইমিগ্রেশন পুলিশে কর্মরত একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তাঁর দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ সদর থানায় আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিশেষ শাখা (এসবি) পুলিশের এক কর্মকর্তাকেও সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সম্প্রতি বিদেশ গমন করেন। তাঁর বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও তিনি দেশত্যাগ করেন, যা আইনগত ও প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্নের সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। এই প্রেক্ষাপটেই পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের দেশত্যাগ সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করার দায়িত্ব রয়েছে। সাবেক রাষ্ট্রপতির নাম ও অবস্থান সম্পর্কে যথাযথ তথ্য যাচাই না করায় সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়। অন্যদিকে, কিশোরগঞ্জ সদর থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যথাসময়ে তথ্য হালনাগাদ না করায় এবং উচ্চপদস্থ কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করায় তাঁর বিরুদ্ধেও সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই রকম গাফিলতির কারণে এসবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ জারি হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দায়িত্বে অবহেলা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে—এই বিবেচনায় পুলিশ প্রশাসন ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনায় কঠোর নজরদারি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা চলমান থাকা অবস্থায় বিদেশ গমনের ঘটনা নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে।
পুলিশ প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ ও স্বচ্ছ তদন্ত প্রক্রিয়া এই ঘটনার কার্যকর সমাধান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
repoter