
ছবি: -সংগৃহীত ছবি
বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ, দারিদ্র্য এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ আগ্রাসী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শুরু হলো জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশন। মঙ্গলবার নিউইয়র্কে আনুষ্ঠানিকভাবে অধিবেশন উদ্বোধন করেন নবনির্বাচিত সভাপতি এ্যানালিনা বেরবোক।
১৯৪৫ সালের সনদ অনুযায়ী শপথ গ্রহণকালে জার্মানির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যানালিনা বলেন, বিশ্ব এখন এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে, যেখানে সংকটগুলোকে স্বাভাবিকভাবে দেখার কোনো অবকাশ নেই। এবারের অধিবেশন হবে মানবতার কল্যাণে অবদান রাখার একটি বিশেষ অঙ্গীকার, সেই লক্ষ্যেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জাতিসংঘ। তিনি সাহসের সঙ্গে যৌথভাবে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রাষ্ট্রসমূহকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এ্যানালিনা বেরবোক জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের পঞ্চম নারী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁর সভাপতিত্বে এবারের অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য—“আরো ভালোর জন্যে ঐক্য : ৮০ বছর এবং অধিকতর শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকার।” আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অধিবেশনের মূল পর্বে ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। একই সঙ্গে তাঁরা সমসাময়িক বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামেও অংশ নেবেন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অধিবেশনে যোগ দেবেন। তিনি বিশ্বশান্তির অভিপ্রায়ে অনুষ্ঠিত সাইড-ইভেন্টগুলোতে বক্তব্য রাখবেন এবং অভিজ্ঞতার আলোকে করণীয় তুলে ধরবেন। জাতিসংঘের প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ইউনূসের নিউইয়র্কে পৌঁছানোর কথা রয়েছে ২২ সেপ্টেম্বর।
এদিকে, অধিবেশন শুরু হওয়ার দিনেই মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলাকালীন সময়ে কাতারে হামলার ঘটনা জাতিসংঘকে নতুন এক জটিল পরিস্থিতির মুখে ঠেলে দিয়েছে। কূটনীতিকরা মনে করছেন, এই ঘটনা অধিবেশনের গতিপ্রকৃতিতেও প্রভাব ফেলবে।
অধিবেশনের উদ্বোধনী বক্তব্যে এ্যানালিনা বিশ্ববাসীর বর্তমান দুর্দশার কথা উল্লেখ করে বলেন, যদি জাতিসংঘ এ অবস্থায় নির্লিপ্ত থাকে তবে কষ্ট আরও তীব্র হবে। তিনি মনে করিয়ে দেন যে, একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী বিশ্ব গঠনে গত বছরের অধিবেশনে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সকলে মিলে কাজ করতে হবে। সকল রাষ্ট্রকে সমস্বরে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দ্বিধাহীন চিত্তে সমস্যা ও সঙ্কটের অবসান ঘটানো ছাড়া শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগোনো সম্ভব নয়।
জাতিসংঘের সভাপতি মনে করেন, এবারের অধিবেশন বিশ্ব সম্প্রদায়কে প্রত্যাশিত শান্তি ও উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সম্মিলিত অঙ্গীকার ও কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া মানবতার জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা যাবে না।
repoter