ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
ক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশে গত দুই মাস ধরে ভেনেজুয়েলার উপকূলসংলগ্ন এলাকায় সামরিক তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। ‘মাদক সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর নামে মার্কিন বাহিনী বেসামরিক নৌযানের ওপর একের পর এক প্রাণঘাতী হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ৮০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
যুদ্ধবাজ নীতিনির্ধারকেরা এখন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সামরিক অভিযান আরও সম্প্রসারণের আহ্বান জানাচ্ছেন।
‘রাষ্ট্রও সন্ত্রাস ছড়ায়’—বিশ্লেষকদের মন্তব্য
ভূগোলবিদ স্টুয়ার্ট এলডেন তাঁর আলোচিত বই টেরর অ্যান্ড টেরিটরি–তে বলেন, সন্ত্রাসবাদকে কেবল রাষ্ট্রবহির্ভূত গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য হিসেবে দেখা ভুল; রাষ্ট্রও এমনভাবে কাজ করতে পারে, যা মানুষের মনে ভীতি ছড়ায়।
গবেষণার তথ্যও সেটিই নির্দেশ করে। ব্রাউন ইউনিভার্সিটির কস্টস অব ওয়্যার প্রকল্পের হিসাব অনুযায়ী,
-
২০০১–২০২৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে’
-
৪ লাখের বেশি বেসামরিক মানুষ সরাসরি সহিংসতায় নিহত
-
পরোক্ষ মৃত্যু বিবেচনায় মোট সংখ্যা পৌঁছেছে ৩৫ লাখে
-
-
অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা–সম্পর্কিত কারণে ২০১০–২০২১ সালে বছরে ৫ লাখ অতিরিক্ত মৃত্যু ঘটেছে—(দ্য ল্যানসেট, গবেষণা)
নজরদারি এড়াতে মরিয়া ট্রাম্প প্রশাসন
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের একটি মূল কৌশল হলো প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া এবং আদালতের তদারকি দুর্বল করা। ফলে সামরিক অভিযান বা সহিংসতার নির্দেশ দেওয়ার ওপর কার্যত নিয়ন্ত্রণহীন ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে।
শিকাগোতে বিক্ষোভ দমনে সেনা মোতায়েনের চেষ্টা নিয়ে হওয়া মামলার উদাহরণ তুলে তাঁরা বলেন—প্রশাসন দাবি করেছে, ‘বিদ্রোহ’ কী, তা সংজ্ঞায়িত করার সম্পূর্ণ ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের। এই ব্যাখ্যার ভিত্তিতে সেনা মোতায়েনের সীমা প্রায় বাতিল হয়ে যাচ্ছে।
একই যুক্তি এখন ভেনেজুয়েলায়
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অভ্যন্তরে সেনা ব্যবহারের এই যুক্তিকেই ট্রাম্প এখন লাতিন আমেরিকায় সামরিক হামলার বৈধতা হিসেবে ব্যবহার করছেন। কারা ‘সন্ত্রাসী’, তা নির্ধারণের পুরো ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের—এটাই মূল লজিক।
মাদকবিরোধী অজুহাত ও বাস্তবতা
ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছেন, মাদক পাচারকারীরা মার্কিন নাগরিকদের হত্যা করছে, তাই তাদের ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা করা উচিত। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে অতিমাত্রায় মাদক সেবনে মৃত্যুর প্রধান কারণ ফেন্টানিল, যা ভেনেজুয়েলা উৎপাদনই করে না।
এমনকি মার্কিন কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত আক্রমণের শিকার নৌযানগুলোতে বাস্তবে মাদক ছিল—এমন প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা
আইন–বিশ্লেষকদের মতে—
-
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদ্ধতি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সীমা ভেঙে দিচ্ছে,
-
সামরিক বাহিনীর প্রাণঘাতী ব্যবহারের নিয়মকে প্রায় অদৃশ্য করে দিচ্ছে,
-
এবং অতীতের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধকে’ আরও বিপজ্জনক, অগোপনিক ও নজরদারিহীন পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে।
আগের দুই দশক বিশ্ব দেখেছে—‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ নামে কোথাও পানির
repoter

