ছবি: বিশ্বের অন্যতম অত্যাধুনিক ও সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরি জেরাল্ড ফোর্ড
যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলাকে কেন্দ্র করে একটি নতুন ধরনের অভিযান শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, জানিয়েছে চারজন মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে। প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর মধ্যেই ট্রাম্প প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তবে অভিযানের সঠিক সময় বা পরিধি এখনও নিশ্চিত নয়, এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না তাও স্পষ্ট নয়। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা বেড়েছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে তার সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে এবং ওয়াশিংটন ও কারাকাসের সম্পর্ক আরও খারাপ হচ্ছে।
চারজন কর্মকর্তার মধ্যে দুজন জানিয়েছেন, মাদুরোর বিরুদ্ধে নতুন অভিযানের প্রথম ধাপ হতে পারে গোপন সামরিক কার্যক্রম। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। হোয়াইট হাউসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ভেনেজুয়েলার ক্ষেত্রে “কিছুই বাদ দেওয়া হচ্ছে না”। তিনি আরও জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প মাদকের প্রবেশ রুখতে এবং দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের ক্ষমতা ব্যবহার করতে প্রস্তুত।
ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে বিভিন্ন বিকল্প বিবেচনা করছে। তারা দাবি করছে, প্রেসিডেন্ট মাদুরো অবৈধ মাদকের সরবরাহে ভূমিকা রাখছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটাচ্ছে। মাদুরো এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মার্কিন কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, সম্ভাব্য বিকল্পের মধ্যে মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিষয়টিও থাকতে পারে। মাদুরো অভিযোগ করেন, ট্রাম্প তাঁকে সরানোর চেষ্টা করছেন এবং ভেনেজুয়েলার জনগণ ও সামরিক বাহিনী এমন প্রচেষ্টা প্রতিরোধ করবে।
কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে। নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় বিমানবাহী জাহাজ জেরাল্ড আর ফোর্ড ১৬ নভেম্বর পৌঁছেছে, যার সঙ্গে আছে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি পারমাণবিক সাবমেরিন এবং এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান। এর পাশাপাশি, মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) বিমান সংস্থাগুলোকে সতর্ক করেছে, ভেনেজুয়েলার আকাশসীমায় উড়তে গেলে সম্ভাব্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। কয়েকটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ইতিমধ্যেই বাতিল হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র আগামীকাল ‘কার্টেল দে লস সোলেস’-কে বিদেশি সন্ত্রাসী সংস্থা হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছে। ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই তালিকাভুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্র মাদুরোর সম্পদ এবং ভেনেজুয়েলার অবকাঠামোতে নতুনভাবে পদক্ষেপ নিতে পারবে। তবে তিনি একই সঙ্গে কূটনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা খোলা রেখেছেন। ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে কথাবার্তা চলছে, যা নতুন সামরিক অভিযানের সময় বা পরিধিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
repoter

