
ছবি: -সংগৃহীত ছবি
ঢাকা – ফরিদপুর জেলার সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, এ বিষয়ে ইতোমধ্যে হাইকোর্টে রিট দায়ের হয়েছে এবং কমিশন মনে করে আদালতের নিষ্পত্তির পরেই চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসি সচিব বলেন, ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের পাঠানো চিঠি নির্বাচন কমিশন হাতে পেয়েছে। সেই চিঠিতে জেলার সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিষয়টি এখন বিচারাধীন থাকায় কমিশন স্বাধীনভাবে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
তিনি বলেন, “আমরা জেলা প্রশাসকের চিঠি পেয়েছি। কিন্তু যেহেতু বিষয়টি হাইকোর্টে রিট আকারে বিচারাধীন, তাই আদালত থেকে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন।”
ফরিদপুরের সীমানা ইস্যুটি সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় এসেছে। জেলার বিভিন্ন অংশ নিয়ে স্থানীয়ভাবে মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে, যা প্রশাসনিকভাবে চিঠি আকারে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করেছেন জেলা প্রশাসক। এ বিষয়ে আদালতে রিট দায়ের হওয়ায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
ইসি সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন সংবিধান ও আইনের আওতায় কাজ করে। আদালতের নির্দেশনা ছাড়া কোনো পদক্ষেপ নিলে তা আইনি জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই কমিশন অপেক্ষা করছে আদালতের রায়ের জন্য। তিনি যোগ করেন, “আমরা চাই না কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে তা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হোক। এজন্য আদালতের নিষ্পত্তি অত্যন্ত জরুরি।”
এদিকে ফরিদপুরের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে স্থানীয় মহলে নানা আলোচনা চলছে। কেউ কেউ মনে করছেন, প্রশাসনিক জটিলতা এবং রাজনৈতিক চাপ এই ইস্যুকে প্রভাবিত করছে। তবে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, কমিশন কেবলমাত্র আইনের ভিত্তিতে কাজ করবে এবং আদালতের রায়ই এখানে মূল নির্ধারক হবে।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীমানা পুনর্নির্ধারণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। এ ধরনের সিদ্ধান্ত সরাসরি প্রশাসনিক বা রাজনৈতিকভাবে নেওয়া যায় না। আদালতের রায়ের পর কমিশন যদি কার্যকর পদক্ষেপ নেয়, তবেই এ নিয়ে স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।
ফরিদপুরের স্থানীয় প্রশাসনও জানিয়েছে, আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত তারা এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করবে না। জেলা প্রশাসকের চিঠির মাধ্যমে কেবল তথ্য কমিশনে পৌঁছানো হয়েছে, যাতে পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
নির্বাচন কমিশনের অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলোও জানিয়েছে, সীমানা পুনর্নির্ধারণের প্রশ্নে কমিশন সব সময় আদালতের নির্দেশ মেনে চলে। পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতাতেও দেখা গেছে, এ ধরনের মামলা হলে কমিশন নিজ উদ্যোগে সিদ্ধান্ত নেয়নি বরং আদালতের নির্দেশনার ওপর নির্ভর করেছে।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ আরও বলেন, কমিশনের প্রধান কাজ হলো নির্বাচন পরিচালনা করা। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো প্রশাসনিক বা আইনি বিষয় আদালতের রায়ের ভিত্তিতেই পরিচালিত হয়। “আমরা আদালতের রায় হাতে পেলেই সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করব,” তিনি উল্লেখ করেন।
সব মিলিয়ে ফরিদপুর জেলার সীমানা পুনর্নির্ধারণ ইস্যুটি এখন আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। নির্বাচন কমিশন পরিষ্কার জানিয়েছে, আদালতের নিষ্পত্তির আগে তারা কোনো উদ্যোগ নেবে না। ফলে স্থানীয় মানুষের মধ্যে যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে, তার সমাধান মিলবে কেবল হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পর।
repoter