
ছবি: -সংগৃহীত ছবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনার প্রতিবাদে শুরু হওয়া শাটডাউন কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করেছে অফিসার সমিতি। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
বুধবার দুপুরে অফিসার সমিতির সভাপতি মো. মোক্তার হোসেন ও কোষাধ্যক্ষ মো. মাসুদ রানা স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলমান পরিস্থিতি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় অফিসার সমিতির কার্যালয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অফিসার সমিতি ছাড়াও সহায়ক সমিতি, সাধারণ সমিতি ও পরিবহন সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সর্বসম্মতভাবে শাটডাউন স্থগিতের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এর আগে ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে অফিসার সমিতির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অফিসার সমিতির উত্থাপিত দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতেই সমিতি আন্দোলন কর্মসূচি কিছুদিনের জন্য স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়।
অফিসার সমিতি জানিয়েছে, প্রশাসনের দেওয়া আশ্বাস কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে যদি দাবিগুলোর বাস্তবায়ন না হয়, তবে শুধু অফিসার সমিতিই নয়, বরং সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চলমান আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত রাখা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে সচেষ্ট থাকবে। তারা মনে করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের আন্তরিক উদ্যোগ অপরিহার্য। যদি আশ্বাস বাস্তবে রূপ না নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংগঠনগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করে আন্দোলনে নামে। ঘটনার পর অফিসার সমিতি শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরাও এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই সাত দিনের মধ্যে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। নচেৎ পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে এবং একাডেমিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যেই তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কমিটি কাজ করছে। তবে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বলছেন, শুধু তদন্ত নয়, দ্রুত ফলাফল দেখতে হবে এবং দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে।
অফিসার সমিতির নেতারা আশা প্রকাশ করেছেন, প্রশাসন আলোচনায় দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়নে আন্তরিক হবে। তারা চান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিবেশ শান্তিপূর্ণ থাকুক এবং সবাই সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে কাজ করতে পারুক।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে চলমান অস্থিরতা দ্রুত নিরসন হওয়া উচিত। তারা চান, একাডেমিক কার্যক্রম যেন বাধাহীনভাবে চলতে পারে। শিক্ষার্থীদের মতে, প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপই পারে সংকট সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে।
repoter