
ছবি: -সংগৃহীত ছবি
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে তৈরি হচ্ছে বিশেষ অ্যাপ ‘পোস্টাল ভোট বিডি’। নিবন্ধিত প্রবাসী ভোটারদের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা, সরকারি কর্মচারী এবং আইনি হেফাজতে থাকা নিবন্ধিত ব্যক্তিরাও এ পদ্ধতিতে ভোট দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ।
বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব বলেন, ভোট নিয়ে কোনো ধরনের সংশয়ের সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতির ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং চলতি সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব সামগ্রী পৌঁছে যাবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিং সিল, গালা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের লক ও হেসিয়ান ব্যাগসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেশে এসে পৌঁছেছে।
তিনি জানান, প্রবাসীদের জন্য ডাক বিভাগের মাধ্যমে ব্যালট পাঠানো হবে। ব্যালট পেপারে প্রার্থীর নাম থাকবে না, শুধুমাত্র প্রতীক থাকবে। প্রতীকের পাশে টিক বা ক্রস চিহ্ন দিয়ে ভোট দিতে হবে। প্রতিটি প্রবাসী ভোটারের ঠিকানায় তিনটি খাম পাঠানো হবে—একটি ব্যালট পেপারের জন্য, একটি ভোট দেওয়ার পর ফেরত পাঠানোর জন্য এবং অন্যটি নির্দেশনা সম্বলিত খাম। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডাক বিভাগের মাধ্যমে ভোট ফেরত পাঠাতে হবে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে।
ইসি সচিব স্পষ্ট করে জানান, প্রবাসীদের জন্য নির্ধারিত এই ব্যবস্থা শুধু নিবন্ধিত ভোটারদের জন্য প্রযোজ্য। কেউ নিবন্ধন করে দেশে এসে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন না। নিবন্ধনের পদ্ধতি ও সময় পরে জানানো হবে, তবে এটি পুরোপুরি নির্ভর করবে নির্বাচনী তফসিলের ওপর।
ব্রিফিংয়ে তিনি আরও জানান, নির্বাচন কমিশনের সচিবালয় আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন পেয়েছে। এর ফলে নির্বাচন কর্মকর্তাদের সার্ভিস কাঠামো গঠন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ইসির অধীনে রাখার বিষয়ে নীতিগত সম্মতি দেওয়া হয়েছে।
নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন এবং পর্যবেক্ষক সংস্থার তালিকা তৈরির কাজও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে ২২টি নিবন্ধনপ্রত্যাশী দলের সরেজমিন তদন্ত শেষ হয়েছে এবং তিন শতাধিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আবেদন করেছে। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ হওয়ার কথা রয়েছে।
সীমানা নির্ধারণ প্রসঙ্গে ইসি সচিব জানান, ৩০০ আসনের সীমানা ঠিক করা হয়েছে। তবে এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে আপত্তি ও বিক্ষোভ হয়েছে এবং আদালতে অন্তত ১৮টি রিট আবেদন জমা পড়েছে। তিনি বলেন, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, তাই কমিশন কোনো মন্তব্য করবে না। আইনে যেমন ইসির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করার সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তেমনি আদালতে যাওয়ার অধিকারও সবার আছে। তাই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আদালতের ওপরই নির্ভর করছে।
অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশন আগামী ২২ সেপ্টেম্বর ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক করবে। তিনজন বিদেশী ও চারজন স্থানীয় পর্যবেক্ষক নিয়ে গঠিত টিমটি নির্বাচনকালীন পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করতে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে।
সবশেষে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, নির্বাচনী সামগ্রীর মূল কেনাকাটা সেপ্টেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে। সব প্রস্তুতি যথাসময়ে শেষ করতে কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক এবং সব অংশীজনের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
repoter