ঢাকা,  শুক্রবার
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ০৬:৫৭ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* নেপাল থেকে দেশে ফিরেছেন জাতীয় ফুটবল দল * এনসিএল টি-টোয়েন্টির দ্বিতীয় আসর শুরু ১৪ সেপ্টেম্বর, স্কোয়াডে মুশফিক ও রিয়াদ * যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গুলিতে চার্লি কার্ক নিহত, রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ * সেনা কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা আরও দুই মাস বাড়িয়েছে সরকার * নেপালে কারাগারে সেনার গুলিতে দুই বন্দি নিহত, সহিংসতায় প্রাণহানি বাড়ছে * কারচুপির অভিযোগে জাকসু নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা ছাত্রদলের * যুদ্ধ, দারিদ্র্য ও জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলায় ঐক্যের আহ্বান নিয়ে জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনের সূচনা * ৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জাকসু নির্বাচন বৃহস্পতিবার * চূড়ান্ত ফল ঘোষণায় ডাকসুর শীর্ষ তিন পদে শিবির-সমর্থিত প্রার্থীদের জয় * ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী তন্বী, শীর্ষ তিন পদে শিবির-সমর্থিত প্যানেলের দাপট

“নারীদের ভোট পেতে বিড়ালের ছবি নয়, দরকার নারীবান্ধব ইশতেহার: ডাকসু প্রার্থী জাহেদ আহমদ”

repoter

প্রকাশিত: ০৬:৪৬:৩২অপরাহ্ন , ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আপডেট: ০৬:৪৬:৩২অপরাহ্ন , ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

-সংগৃহীত ছবি

ছবি: -সংগৃহীত ছবি

আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে প্রচারণা চলছে ভিন্নমাত্রায়। কেউ ব্যবহার করছেন নান্দনিক প্রচারণা কৌশল, কেউ বা কালচারাল ইমোশনকে সামনে আনছেন। তবে এসব কৌশলের বাইরে থেকে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী জাহেদ আহমদ মনে করেন, প্রার্থীর যোগ্যতা প্রমাণ হয় তার যাত্রা, নিবেদন এবং সময়োপযোগী ইশতেহারের মাধ্যমে, কোনো প্রতীকী প্রচারণার মাধ্যমে নয়।

সম্প্রতি দেশ রূপান্তর অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাহেদ আহমদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী এই ডাকসু নির্বাচন অন্য সব নির্বাচনের তুলনায় আলাদা। এটির আলাদা তাৎপর্য রয়েছে, কারণ এটাই আমাদের সুযোগ নতুন রাজনৈতিক পরিসর তৈরির, যেখান থেকে নিশ্চিত করা যাবে রাজনৈতিক অগ্রগতি। আমরা আর রাজনৈতিক স্থবিরতার ঘূর্ণিপাকে আটকে থাকতে চাই না।”

তিনি প্রচারণার ধরণ নিয়ে বলেন, “এখন প্রার্থীরা নিজেদের উপস্থাপন করতে অ্যাস্থেটিক্স ব্যবহার করছেন। এর ভালো দিক হলো, আমরা অ্যাস্থেটিক্সের নানা মাত্রা সম্পর্কে জানতে পারছি। কিন্তু এটাও দেখতে হবে যে, যোগ্যতার পরিবর্তে কেবল অ্যাস্থেটিক্সের ওপর নির্ভরশীল প্রচারণা প্রার্থীর প্রকৃত ক্ষমতা আড়াল করছে কিনা। অনেক প্রার্থী কেবল কালচারাল ইমোশন কাজে লাগাচ্ছেন, যেখানে তাদের যোগ্যতার বিষয়টি আড়ালে থেকে যাচ্ছে। যোগ্যতার জায়গা হতে হবে স্পষ্ট—যার ভিত্তি তার যাত্রা, নিষ্ঠা আর সঠিক ইশতেহার।”

গত নির্বাচনের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে জাহেদ আহমদ বলেন, নারী ভোট এবারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কিন্তু প্রার্থীরা নারীবান্ধব ইশতেহার না দিয়ে ভিন্নভাবে নারীদের ভোট টানার চেষ্টা করছেন। “অনেকে বিড়াল নিয়ে ছবি দিচ্ছেন, কেউ নিজেকে বাংলার হিরো হিসেবে উপস্থাপন করছেন। অথচ নারীদের জন্য বাস্তবসম্মত ইশতেহার দেওয়াই ছিল প্রয়োজন। এসব প্রচারণা নারীদের রাজনৈতিক সচেতনতার পরিবর্তে অসচেতনতার পালে হাওয়া দিচ্ছে কিনা, সেটি ভাবা দরকার। প্রার্থীর যোগ্যতা কখনোই শুধু কারো সঙ্গে অ্যাস্থেটিক সেন্স বা কালচারাল ইমোশন মিলে যাওয়ায় নির্ভর করে না,” তিনি মন্তব্য করেন।

ডাকসু নির্বাচনে তার মূল পরিকল্পনা প্রসঙ্গে সমাজবিজ্ঞানের এই শিক্ষার্থী বলেন, “দলীয়করণ ও বিরাজনীতিকরণমুক্ত একাডেমিক ক্যাম্পাস নির্মাণের মধ্য দিয়েই প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী আকারে গড়ে তুলতে চাই। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আমাদের যে সংকটগুলো দেখা দিয়েছে, তা নিয়ে আলোচনার যে প্রতিশ্রুতি ছিল, তা হয়নি। শহীদদের দায় এবং সেই আন্দোলনের দায় আমাদের নিতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেদের দায় অনুধাবন করতে পারেন, সেজন্য একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক বোঝাপড়া তৈরি করা আমাদের দায়িত্ব।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা বলছি শিক্ষার্থীদের সংকট নিরসনের কথা, তাদের জীবন সহজ করার কথা। কারণ এই সংকট নিরসনের মধ্য দিয়েই শিক্ষার্থীরা দেশ ও জনগণের দায়িত্ব নেওয়ার মানসিকতা তৈরি করবেন। আমার দেশের যিনি এখনও সহজ জীবনযাপন করতে পারছেন না, তার জীবন সহজ করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।”

ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে ট্যাগিং সংস্কৃতি নিয়ে নিজের অবস্থান জানিয়ে জাহেদ আহমদ বলেন, “ট্যাগিং পলিটিক্স, প্রতিদ্বন্দ্বীকে ভিলেইন হিসেবে উপস্থাপন করা কিংবা ঘায়েল করার প্রবণতা আমরা ভোটের রাজনীতিতে প্রায়ই দেখি। কিন্তু এগুলো সামষ্টিক রাজনৈতিক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করে। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ভোটের রাজনীতিতে নামামাত্র প্রতিযোগিতামূলক মনস্তত্ত্ব কাজ করে না। বরং প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে ট্যাগিংয়ের মাধ্যমে দমন করার চেষ্টা হয়। আগামীর বাংলাদেশে কোনোভাবেই ট্যাগ দিয়ে মানুষের মানবাধিকার হরণ করা যাবে না।”

তার মতে, ডাকসু নির্বাচন হলো এক নতুন রাজনৈতিক ধারার সূচনা। “আমরা চাই প্রতিটি শিক্ষার্থী রাজনৈতিকভাবে সচেতন হোক এবং নিজের দায়িত্ব অনুধাবন করুক। গণঅভ্যুত্থানের যে দায়, যে ইতিহাস, তা যেন প্রত্যেকেই নিজের মধ্যে ধারণ করেন। কেবল তখনই ক্যাম্পাসের রাজনীতি একটি নতুন মোড় নিতে পারবে,” বলেন জাহেদ আহমদ।

ডাকসুর এই প্রার্থী বিশ্বাস করেন, ভোট শুধু নির্বাচিত প্রতিনিধির বিষয় নয়, বরং রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ার একটি সুযোগ। শিক্ষার্থীদের হাতে সেই সুযোগ এখন। তিনি বলেন, “আমাদের ভবিষ্যৎ রাজনীতি হবে সচেতনতার ভিত্তিতে, দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে। অস্থায়ী জনপ্রিয়তা তৈরির জন্য নয়, বরং প্রকৃত রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার জন্য।”

repoter