
ছবি: -সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত এ্যান্টেনিও আলেসান্দ্রে বুধবার বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং সম্পর্ক গভীর করার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে দুইপক্ষই অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও বিস্তৃত ও জোরদার করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ইতালির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করার জন্য দেশের সব সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ বর্তমানে সব সময়ের চেয়ে বেশি উন্নত এবং ইতালির বিনিয়োগকারীরা যে কোনো ক্ষেত্রে এখানে বিনিয়োগ করতে পারে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের বিনিয়োগ সহজতর করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।
রাষ্ট্রদূত এ্যান্টেনিও আলেসান্দ্রে বৈঠকে আবারও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার জন্য ইতালির আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইতালীয় বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি হস্তান্তরকে উৎসাহিত করতে তারা নিবেদিতপ্রাণ এবং বিশেষ করে মধ্যম ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এর মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রকে আরও প্রসারিত করা সম্ভব হবে।
বৈঠকে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) মো. আব্দুর রহিম খান এবং ইতালীয় ডেপুটি হেড অব মিশন ফেডরিকো জামপারেল্লি উপস্থিত ছিলেন। তারা দুই দেশের ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণে চলমান উদ্যোগ এবং সম্ভাব্য নতুন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বৈঠকে উল্লেখ করেন, ইতালির কোম্পানি ও বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে কাজ করতে পারে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে সুবিধাজনক বিনিয়োগ পরিবেশ, শ্রমিক ও কাঁচামালের প্রাপ্যতা এবং সরকারের নীতিগত সমর্থন ইতালীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করছে। আমরা তাদের যেকোনো ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।”
রাষ্ট্রদূত এ্যান্টেনিও আলেসান্দ্রে বলেন, ইতালির উদ্দেশ্য বাংলাদেশে শুধু বিনিয়োগ বৃদ্ধি নয়, বরং প্রযুক্তি হস্তান্তর ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে দুদেশের শিল্পখাতকে আরও শক্তিশালী করা। তিনি বলেন, “মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং দুদেশের ব্যবসায়িক বিনিময় বৃদ্ধি পাবে।”
বৈঠকে দুই পক্ষই বর্তমান ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা, রফতানি ও আমদানির সম্ভাব্য ক্ষেত্র এবং বিনিয়োগ-friendly পরিবেশে উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বিভিন্ন খাতে যৌথ উদ্যোগ এবং নতুন প্রজেক্ট বাস্তবায়নের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, কৃষি প্রযুক্তি, তথ্য প্রযুক্তি, পোশাক ও হালকা শিল্প খাত, অবকাঠামো এবং নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে দুই দেশের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা সম্ভব। বৈঠকে আশা প্রকাশ করা হয়, এই উদ্যোগ দুদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে এবং ব্যবসায়িক পরিবেশকে আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর করবে।
বৈঠকের শেষ অংশে দুই পক্ষই একমত হন যে, নিয়মিত বৈঠক ও পরামর্শের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় পৌঁছানো সম্ভব। এছাড়াও ব্যবসায়িক সহযোগিতার ক্ষেত্রে দুই দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও সমন্বয় বাড়ানো হবে।
repoter