
ছবি: -সংগৃহীত ছবি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, রাজনৈতিক সংস্কার বা পিআর ইস্যুতে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে সমাধান সম্ভব নয়। এ ধরনের বিষয় আলোচনার টেবিলেই নির্ধারিত হওয়া উচিত। তার মতে, আলোচনার টেবিল রেখে রাজপথে নামা আসলে এক ধরনের স্ববিরোধিতা।
বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কমিশনের এজেন্ডায় পিআর ছিল না। তবুও কেউ যদি রাজনৈতিকভাবে কোনো দাবি তোলে, সেটি তার অধিকার। বিএনপিও রাজপথে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরবে। তবে রাজপথে আন্দোলন করে পিআরের মতো বিষয় আদায় করা সম্ভব নয়, এজন্য প্রয়োজন আলোচনার টেবিল।
তিনি আরও বলেন, আজকের বৈঠকে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের মতামত উপস্থাপন করা হয়েছে। সেখানে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন বর্তমান সরকার সাংবিধানিক কিনা। এ বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন, সুপ্রিম কোর্টের অভিমতের ভিত্তিতেই সংবিধান মেনে সরকার গঠিত হয়েছে। তাই সংবিধান-সম্পর্কিত যে কোনো বিষয় বাস্তবায়নের আগে বিচার বিভাগের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। তার মতে, সাংবিধানিক আদেশ আজ বা কাল চ্যালেঞ্জ হতে পারে, কিন্তু অযথা বিভ্রান্তি তৈরি করে জাতির সামনে খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত নয়।
সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব নিয়েও তিনি কথা বলেন। সালাহউদ্দিন আহমদের মতে, এ ধরনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যায়, তবে একই বিষয়ে দু’বার গণভোট আয়োজন করা যুক্তিসঙ্গত নয়। যারা নির্বাচিত হবেন, তারা জনগণের কাছে সনদে স্বাক্ষর করে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবেন। আবার কিছু মৌলিক সংস্কারমূলক বিষয় সংসদীয় গণভোটের মাধ্যমে বাস্তবায়নেরও প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু নির্বাচনের দিন গণভোট এবং পরে আবার সংসদীয় গণভোট—এটি গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এসব বিষয় একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই নির্ধারণ করা উচিত।
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, যদি নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে বা বাধাগ্রস্ত হয়, তবে ফ্যাসিবাদী প্রবণতা এবং অসাংবিধানিক শক্তিগুলোই সুযোগ নেবে। এটি দেশের জন্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আলোচনার মাধ্যমেই বর্তমান সংকটের সমাধান সম্ভব হবে। সংসদ গঠনের পর যদি মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নের প্রয়োজন হয়, তখন গণভোট আয়োজন করা যেতে পারে। তবে এখনই অযথা জটিলতা সৃষ্টি না করে আলোচনার টেবিলেই সব পক্ষকে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
সালাহউদ্দিন আহমদের মতে, রাজনৈতিক অধিকার চর্চা করা সবার অধিকার, তবে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে পথ খোঁজা উচিত। আলোচনার বাইরে গিয়ে কোনো ধরনের সমাধান খুঁজতে গেলে কেবল সংকটই ঘনীভূত হবে।
তিনি আবারও পুনর্ব্যক্ত করেন যে, গণতন্ত্র রক্ষায়, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে এবং মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য আলোচনার বিকল্প নেই। গণভোট, সাংবিধানিক সংশোধনী বা বড় কোনো সংস্কার—এসব বিষয় আলোচনার টেবিলেই স্থির করা হলে তা হবে দেশের জন্য মঙ্গলজনক।
repoter