ঢাকা,  রবিবার
২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০৯:২৬ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

‘উই হ্যাভ আ প্ল্যান’: গণসংবর্ধনায় তারেক রহমান

repoter

প্রকাশিত: ১২:৪২:১০অপরাহ্ন , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১২:৪২:১০অপরাহ্ন , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫

গণসংবর্ধনা মঞ্চে বক্তব্য দিচ্ছেন তারেক রহমান। ২৫ ডিসেম্বর

ছবি: গণসংবর্ধনা মঞ্চে বক্তব্য দিচ্ছেন তারেক রহমান। ২৫ ডিসেম্বর

১৭ বছর নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফিরে গণসংবর্ধনার মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “উই হ্যাভ আ প্ল্যান—ফর দ্য পিপল, ফর দ্য কান্ট্রি।”

বক্তব্যের শুরুতে ‘প্রিয় বাংলাদেশ’ বলে তিনি বলেন, দেশের মানুষের জন্য এবং দেশের জন্য একটি পরিকল্পনা রয়েছে, যার বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। দেশের মাটিতে ফিরে দেওয়া প্রথম বক্তব্যে তিনি পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেননি, তবে বলেছেন—মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হলে প্রত্যেকের সহযোগিতা লাগবে। শুরুতে ‘আই হ্যাভ আ প্ল্যান’ বললেও পরে তিনি বারবার ‘উই হ্যাভ আ প্ল্যান’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকার পূর্বাচলের ৩০০ ফুট এলাকায় জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়েতে নির্মিত মঞ্চে প্রায় ১৬ মিনিট বক্তব্য দেন তারেক রহমান। তাঁকে স্বাগত জানাতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী সেখানে জড়ো হন। তাঁর বক্তব্যের আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।

বক্তব্যে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ বক্তৃতার প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে তিনি বলতে চান—দেশের মানুষের জন্য, দেশের জন্য তাঁর একটি পরিকল্পনা রয়েছে, যা জনগণের স্বার্থেই প্রণীত।

পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন ও মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বক্তব্য শেষে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানানোর সময় আবার মাইকে এসে তিনি বলেন, “মনে রাখবেন—উই হ্যাভ আ প্ল্যান। উই হ্যাভ আ প্ল্যান ফর দ্য পিপল, ফর দ্য কান্ট্রি। ইনশা আল্লাহ, আমরা সেই প্ল্যান বাস্তবায়ন করব।”

শান্তি, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার আহ্বান

বক্তব্যে বারবার শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেন তারেক রহমান। ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি বা রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে সবাইকে নিরাপদ রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো বিশৃঙ্খলা পরিহার করে ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে—যাতে শিশু, নারী, পুরুষসহ সব বয়স ও পেশার মানুষ নিরাপদে থাকতে পারে।

দুপুর সাড়ে ১২টার পর বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে জনসমাগমের কারণে মঞ্চে পৌঁছাতে তাঁর তিন ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। তিনি বিকেল ৩টা ৫১ মিনিটে মঞ্চে ওঠেন এবং ৩টা ৫৭ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন।

ইতিহাস, তরুণ প্রজন্ম ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র

বাংলাদেশের ইতিহাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের কথা উল্লেখ করে তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর এবং ১৯৯০ সালের গণ-আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্ম দেশ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আত্মত্যাগ করেছে।

তিনি তরুণদের দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারাই আগামী দিনে দেশকে নেতৃত্ব দেবে। পাহাড়-সমতল, নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, সব ধর্ম ও শ্রেণির মানুষের জন্য নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।

ন্যায়পরায়ণতার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনার অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যেকোনো উসকানির মুখে ধীর-শান্ত থাকতে হবে এবং ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

বক্তব্যে তিনি তাঁর মা, বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চান।

repoter