
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে শনিবার (১৭ মে) সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পোশাক শ্রমিকরা। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী চলা এই অবরোধের কারণে মহাসড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায় এবং সাধারণ যাত্রীরা মারাত্মক ভোগান্তির সম্মুখীন হন।
ঘটনাটি ঘটে সকাল ৯টার দিকে টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকায় অবস্থিত বিএইচআইএস অ্যাপারেলস লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানার সামনে। কারখানার শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, এপ্রিল মাসের বেতন এখনও পরিশোধ না করায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উক্ত কারখানায় দেড় হাজারেরও বেশি শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন। প্রতিদিনের মতো ওইদিন সকালেও শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করলেও কাজ না করে কিছুক্ষণ পর সবাই বেরিয়ে এসে মহাসড়কের দুই পাশ দখল করে অবস্থান নেন।
এর ফলে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং উভয় দিকেই যানজটে দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ এবং রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সসহ সব ধরনের যানবাহন আটকে পড়ে।
বিষয়টি জানার পর গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২-এর টঙ্গী অঞ্চলের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
দীর্ঘ আলোচনার পর বেলা ১২টার দিকে শ্রমিকদের সরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয় এবং ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
পুলিশ জানায়, শ্রমিকদের দাবিগুলো কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে এবং বিষয়টি সমাধানের জন্য মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে পরিস্থিতি যেন আর উত্তপ্ত না হয়, সেজন্য শ্রমিকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে, শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বেতন বিলম্বে দেওয়া হচ্ছে, এবং এবারের পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে উঠেছে বলেই তারা সড়কে নামতে বাধ্য হয়েছেন।
ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন এবং শিল্প পুলিশ কারখানা কর্তৃপক্ষকে দ্রুত সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দিয়েছে। তবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বকেয়া বেতন পরিশোধ সংক্রান্ত কোনো নিশ্চিত সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।
অবরোধ ও আন্দোলনের জেরে দত্তপাড়া এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং দোকানপাট আংশিকভাবে বন্ধ থাকে।
স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে কারখানাগুলোকে সময়মতো শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
repoter