
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পাহেলগামে পর্যটকদের ওপর এক জঙ্গি হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। হামলায় আরও ১০ জন আহত হয়েছেন। এই হামলা পুরো অঞ্চলে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে, এবং এর মধ্যে একটি ঘটনা বিশেষভাবে নজর কাড়ে—হামলাকারীরা নারী ও পুরুষদের আলাদা করে পুরুষদেরকে নিশানা করে গুলি চালিয়েছে।
হামলার ঘটনায় নিহত একজন নৌ-কর্মকর্তা, লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়াল, যিনি সদ্য বিবাহিত ছিলেন, কাশ্মীরে স্বস্ত্রীক বেড়াতে গিয়েছিলেন। তার মৃত্যু সংবাদে স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে তার পরিবার ও প্রতিবেশীরা। মাত্র ১৬ এপ্রিল তার বিয়ে হয়েছিল, এবং ১৯ এপ্রিল ছিল বিবাহোত্তর সংবর্ধনা। এরপরই তিনি কাশ্মীর বেড়াতে যান। হামলায় নিহত হওয়া অন্যান্যদের মধ্যে মহারাষ্ট্রের পাঁচজন পর্যটকও রয়েছেন।
এছাড়া, এক বেঁচে যাওয়া পর্যটক পল্লবী তার স্বামীর নিহত হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেছেন। পল্লবী জানান, তারা কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন, আর তার স্বামী মঞ্জুনাথ স্থানীয় বাজারে রুটি কিনতে গিয়েছিলেন। সেসময় গুলির শব্দ শোনার পর তারা প্রথমে ভাবেন যে, সেনাবাহিনী হয়তো গুলি করছে, কিন্তু পরে তিনি দেখেন তার স্বামী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন, গুলি তার মাথায় লেগেছিল।
পল্লবী বলেন, হামলাকারীরা তাদেরকে প্রাণে ছেড়ে দেওয়ার সময় জানান, “আপনাদের মারব না, মোদীকে গিয়ে বলেন।” এই ঘটনায় হামলাকারীরা সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত ছিলেন না, এবং তারা বিশেষভাবে পুরুষদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, সন্ত্রাসবাদীদের বিচারের আওতায় আনা হবে। হামলার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শ্রীনগরে গিয়ে উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠক করেছেন। ইতোমধ্যে ভারতীয় সেনা ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ পাহেলগামের বাইসরান এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে।
এই হামলা নিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে বারামুলা, শ্রীনগর, পুঞ্চ, কুপওয়ারা ও জম্মুতে। জম্মুতে বজরং দল কর্মীরাও বিক্ষোভ করেছেন।
কাশ্মীর সফর করা পল্লবী এখনও তার স্বামীর মরদেহ কীভাবে শিবমোগ্গায় ফিরিয়ে আনা হবে, তা নিয়ে চিন্তিত। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন একসঙ্গে এসেছিলাম, তিনজন একসঙ্গেই ফিরব।”
repoter