ছবি: -সংগৃহীত ছবি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রবিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। বৈঠকটির মূল এজেন্ডা হলো জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে এক যৌথ মতবিনিময়। বিকেল ৩টার পরপরই শুরু হওয়া বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করছেন।
বৈঠকে বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াতে ইসলামীসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার প্রধান বিষয় হলো জুলাই সনদ সম্পর্কিত দলগুলোর অবস্থান ও কমিশনের কার্যকর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানায়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জুলাই সনদ নিয়ে মূল কাঠামোগত ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। তবে, সনদটি বাস্তবায়ন করার সঠিক পদ্ধতি এখনও চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। বৈঠকে কমিশন কয়েকটি সম্ভাব্য প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে। এর মধ্যে গণভোট আয়োজন, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ, অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন বিষয়ক বিভিন্ন বিকল্প আলোচনা করা হয়।
ড. আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন কমিশন ইতিমধ্যেই এই বিষয়গুলো নিয়ে পূর্বে একটি প্রাথমিক প্রস্তাবনা তৈরি করেছে। ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত শেষ বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এখনো সনদটির প্রয়োগের সময়সূচি, আইনগত কাঠামো এবং প্রশাসনিক বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়নি।
বৈঠকে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা কমিশনের প্রস্তাবিত পদক্ষেপগুলো নিয়ে মতামত ও প্রস্তাবনা দিয়েছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কমিশনের এই উদ্যোগ দেশের রাজনীতিতে সংলাপ ও ঐকমত্য বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে এটি ভবিষ্যতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হতে পারে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকগুলোতে মূলত লক্ষ্য করা হয় যে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় ও সংলাপের মাধ্যমে কোনো প্রস্তাব চূড়ান্ত করা যায় কি না। এটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ জুলাই সনদ দেশের সংবিধান ও রাজনৈতিক কাঠামোর সঙ্গে সম্পর্কিত একটি সংবেদনশীল বিষয়।
সূত্র জানায়, কমিশন আগামী দিনে আরও বৈঠক আয়োজন করবে যাতে সব দলকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া যায় এবং বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর কাঠামো তৈরি করা সম্ভব হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে, এসব বৈঠকের মাধ্যমে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব কমানো এবং সংলাপের মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করা সম্ভব হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশের রাজনীতিতে দীর্ঘ সময় ধরে বিরাজমান দূরত্ব এবং আস্থা ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই ধরনের উদ্যোগ একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে ধরা যেতে পারে। এছাড়া, কমিশনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো একত্রিত হয়ে দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আইনগত ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে অংশ নিতে পারবে।
এ বৈঠকের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য সমন্বিত পদক্ষেপ নির্ধারণ করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী বৈঠকে কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে আলোচনা চালিয়ে কার্যকর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার চেষ্টা করবেন।
repoter




