ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি বললেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের আঘাতে ভেঙে পড়েছে জায়নিস্ট শাসনের গর্ব; ইরানি জাতির ঐক্যের প্রশংসা
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ফের মুখ খুলেছেন। আজ (বুধবার) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, ইরানের আঘাতে ইসরায়েলের অহংকার এবং দাবির ভিত্তি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেছে। এ নিয়ে সংঘাত শুরুর পর তৃতীয়বারের মতো তিনি ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান নিয়ে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিলেন।
খামেনি তার বার্তায় বলেন, “ইসলামী প্রজাতন্ত্রের শক্ত আঘাতে ইসরায়েলের ভ্রান্ত শাসনব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে। আমি এই বিজয়ের জন্য ইরানি জনগণকে অভিনন্দন জানাই।" তিনি এটিকে ইসলামী জাতির বিজয় হিসেবেও উল্লেখ করেন।
এই বার্তা প্রকাশের কয়েক মিনিট আগেই তিনি ‘এক্স’-এ আরেকটি বার্তায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিজয়ের জন্য ইরানি জনগণকে সরাসরি শুভেচ্ছা জানান। খামেনি বলেন, “এই বিজয় শুধু একটি রাজনৈতিক সাফল্য নয়, বরং এটি একটি জাতির ঐক্য, প্রতিরোধ ও আত্মপরিচয়ের প্রকাশ।”
উল্লেখ্য, চলমান এই সংঘাত শুরুর পর থেকে এতদিন পর্যন্ত জনসমক্ষে আসেননি খামেনি। তবে আজকের বার্তায় তিনি কার্যত পুরো জাতির প্রতিনিধিত্বকারী একটি কণ্ঠস্বর তুলে ধরেন। শুধু ‘এক্স’-এ নয়, খামেনি তার টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টেও ফারসি ভাষায় আরেকটি বার্তা প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি ইরানিদের জাতীয় ঐক্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
টেলিগ্রাম বার্তায় তিনি লেখেন,
“তৃতীয়বারের মতো অভিনন্দন জানাচ্ছি। অভিনন্দন ইরানি জাতির এই অবিচল ঐক্যকে। প্রায় ৯ কোটি মানুষের এই জাতি, সশস্ত্র বাহিনীর সমর্থনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে থেকেছে। তারা প্রমাণ করেছে, প্রয়োজনে এই জাতির পক্ষ থেকে কেবল একটি কণ্ঠস্বরই শোনা যাবে। এই ঐক্য, এই সাহসিকতা, এই অবস্থান আমাদের জাতিগত গৌরবের প্রতীক হয়ে থাকবে।”
খামেনির ভাষ্য থেকে স্পষ্ট, তিনি এই সংঘাতকে কেবল সামরিক লড়াই হিসেবে দেখছেন না, বরং এটিকে একটি জাতীয় মূল্যবোধ ও আদর্শ রক্ষার সংগ্রাম হিসেবেই ব্যাখ্যা করছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের অভ্যন্তরে জনমতকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে খামেনির এই বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে চলা আন্তর্জাতিক চাপ ও নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এই সংঘাত ইরানকে একটি জাতীয়তাবাদী আবেগের মোড়ে এনে দিয়েছে।
খামেনির বার্তা এমন এক সময়ে এলো, যখন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের সামরিক অভিযানে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছেছে। বিশ্বের নানা প্রান্তে এই পরিস্থিতির গভীর পর্যবেক্ষণ চলছে।
শেষ পর্যন্ত, খামেনির বক্তব্য ইরানের জনগণের মনোবলকে উজ্জীবিত করার পাশাপাশি আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতেও একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়ে গেল — ইরান কোনোভাবেই পিছু হটবে না।
repoter

