ছবি: গত বৃহস্পতিবার রাতে সন্ত্রাসীরা রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ভাঙচুর–লুটপাট চালায়। পরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় কার্যালয়টি
রাজধানীতে দুটি জাতীয় দৈনিক ও দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত অন্তত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এখন পর্যন্ত ৩১ জনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে।
আজ সকাল ১০টা ৩১ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ এলাকায় দুটি জাতীয় দৈনিকের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। পরে আগুন দিয়ে কার্যালয় দুটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। একই দিন মধ্যরাতে ধানমন্ডিতে একটি ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ভবনে হামলা হয়। পরদিন শুক্রবার রাতে তোপখানা রোডে আরেকটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, পরিকল্পিতভাবে এই আগুন লাগানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে সাতজনের পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে। তাঁরা হলেন—মো. কাশেম ফারুক, মো. সাইদুর রহমান, রাকিব হোসেন, মো. নাইম, ফয়সাল আহমেদ প্রান্ত, মো. সোহেল রানা ও মো. শফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও গোয়েন্দা পুলিশ আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে, যাঁদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিও ফুটেজে হামলায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে রাকিব হোসেনের বিরুদ্ধে। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্টও দিয়েছেন।
লুট হওয়া ৫০ হাজার টাকাসহ মো. নাইমকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মোট ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা লুটের কথা স্বীকার করেছেন। লুটের টাকা দিয়ে কেনা একটি টেলিভিশন ও একটি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়েছে।
কারওয়ান বাজার রেললাইন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার সোহেলের বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৩টি মামলা রয়েছে। একই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার শফিকুলের বিরুদ্ধেও আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় দুটি মামলা রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, শনাক্ত হওয়া বাকি সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে একটি বিদেশি কূটনৈতিক ভবনের কাছে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টায় জড়িত তিনজনকেও ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয় এবং জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়।
repoter

