ছবি: ছবি: সংগৃহীত
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে ছাত্র-জনতার অবরোধ কর্মসূচিতে ইসলামী আন্দোলন নেতার সংহতি
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেছেন, দক্ষিণাঞ্চলে এমন আন্দোলনের সূচনা হবে, যা স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে পদত্যাগে বাধ্য করবে। তিনি স্বাস্থ্য উপদেষ্টার উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, “এখানে কেন আন্দোলন করতে হবে? কেন অবরোধ করতে হবে? কেন মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে?” তিনি দাবি করেন, জনগণের উপকারে যৌক্তিক দাবি যদি থাকে, তবে তা অবিলম্বে পূরণ করা উচিত।
রবিবার বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনা দূরীকরণ ও স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে ছাত্র-জনতার ব্লকেড কর্মসূচির ১৪তম দিনে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতি ফয়জুল করিম বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবার প্রধান কেন্দ্র এই হাসপাতাল, যা কেবল একটি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান নয়, বরং এ অঞ্চলের ঐতিহ্য ও ইতিহাসের অংশ। কিন্তু বর্তমানে এখানে সুচিকিৎসার কোনো সুযোগ নেই, পরিবেশ অত্যন্ত নাজুক, যা গোয়াল ঘরের চেয়েও খারাপ। পর্যাপ্ত ডাক্তার ও নার্সের অভাব, অব্যবস্থাপনা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য চিকিৎসা সেবাকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। তিনি অভিযোগ করেন, ভর্তি, ওষুধ সংগ্রহ, চিকিৎসা, এক্সরে ও অন্যান্য পরীক্ষার ক্ষেত্রেও সিন্ডিকেটের প্রভাব বিরাজ করছে। এমনকি মৃতদেহ পরিবহনের জন্যও অ্যাম্বুলেন্স পেতে সিন্ডিকেটের দ্বারস্থ হতে হয়।
তিনি বলেন, এসব দাবি অযৌক্তিক নয়, বরং জনগণের নিরাপদ চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্যই এগুলো উত্থাপন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করার আগে এসব যৌক্তিক দাবি পূরণ করা উচিত। তিনি শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা, উন্নত পরিবেশ সৃষ্টি, যথাযথ চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিতকরণ এবং সকল রোগীর জন্য সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান।
এর আগে রবিবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের সামনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে ছাত্র-জনতা। এতে বরিশাল বিভাগের পাঁচ জেলার সড়কপথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। পরে পুলিশ বিকল্প রুটে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করায় দুর্ভোগ কিছুটা কমে আসে বলে বাসচালকরা জানিয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি হাসপাতালে সিন্ডিকেটের কারণে মানুষ সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না এবং তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বন্ধ করারও চেষ্টা হয়েছে। দাবিগুলো পূরণ না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম।
বরিশাল মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির হোসেন শিকদার জানান, সকাল ১১টা থেকে অবরোধ শুরু হয়ে বিকেল ৫টার দিকে শেষ হয়। এরপর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।
repoter




