ছবি: -সংগৃহীত ছবি
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপিকে কখনোই আওয়ামী লীগের মতো চাটার দলে পরিণত হতে দেওয়া যাবে না। শুধু স্লোগান নয়, শহীদ জিয়ার আদর্শকে ধারণ করে রাজনীতি করতে হবে। চাটার দল হয়ে গেলে জনগণও বিএনপিকে ভালোবাসবে না।
মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরা এলাকায় বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকরা খাল পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি চালানোর আগে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় বিএনপি সর্বদা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে। দেশের মানুষের জন্য যে মূল্যবোধ রয়েছে, তা ধরে রাখার পাশাপাশি দেশপ্রেমের প্রশ্নে কোনো আপস হবে না।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, দেশের বর্তমান সরকারের কার্যক্রম নিয়ে তারা দৃষ্টান্তমূলক সমালোচনা চালাবে। শেখ হাসিনা যদি দেশ ত্যাগ করেও ভারতে গিয়ে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যান, তবে কেউ যদি অবৈধভাবে আক্রমণ করে, তাদের হাত ভেঙে দেওয়া হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিএনপি সর্বদা সক্রিয় থাকবে।
দেশের রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন। তিনি উল্লেখ করেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রাজনৈতিক ইচ্ছা নেই; তিনি দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছেন। ভবিষ্যতে ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আইনের প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখার ওপর জোর দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি সবসময় আইনের সীমার মধ্যে থাকবে। আইন অনুযায়ী চলবে এবং জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষায় সকল কার্যক্রম পরিচালিত হবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে গণমাধ্যম সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করবে এবং কোনো প্রকার দমন-পীড়ন বা বাধা থাকবে না।
সমাবেশে ছাত্রদল ও অন্যান্য নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বা অন্য কোনো জায়গায় অশান্তি সৃষ্টি করা যাবে না। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো গুজব ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রতিরোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা সকলের দায়িত্ব। রাজনৈতিক কর্মসূচি ও আন্দোলন যথাযথভাবে এবং সংহতভাবে পরিচালিত হলে জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে। মির্জা ফখরুল আশা প্রকাশ করেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধভাবে দেশপ্রেম ও জনগণের কল্যাণের লক্ষ্যে কাজ করবে।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বিএনপির নীতি ও আদর্শের প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, শহীদ জিয়ার মূলনীতি ও আদর্শ অনুযায়ী দেশের জন্য দায়িত্ব পালন করা সকলের কর্তব্য। দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় দলের সদস্যরা সদা সতর্ক থাকবে।
এছাড়া মির্জা ফখরুল বিএনপির যুব ও ছাত্র সংগঠনের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, যুব সমাজকে সুসংগঠিত ও নৈতিকভাবে দায়িত্বশীল হতে হবে। তারা যেন দেশের স্বার্থে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয় এবং বিভ্রান্তিমূলক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকে।
রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নাগরিকদের মধ্যে সামাজিক ঐক্য ও স্থিতিশীলতার প্রতিও মির্জা ফখরুল গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা, শান্তি এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা সক্রিয়ভাবে সরকারের নীতি, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং রাজনৈতিক আন্দোলনের বিষয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেন। তারা মনে করান, বিএনপির লক্ষ্য দেশের জনগণকে সচেতন করা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় কাজ করা।
মির্জা ফখরুল শেষপর্যন্ত সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিভাজন ও গুজব ছড়িয়ে দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করা যাবে না। দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও নাগরিক অধিকার রক্ষা করাই প্রধান লক্ষ্য, এবং তা পূরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
repoter

