ছবি: ছবি: সংগৃহীত
সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা; কলেজ প্রশাসনের প্রস্তাব পর্যবেক্ষণে অনড় অবস্থানে শিক্ষার্থীরা
ঢাকা মেডিকেল কলেজের দীর্ঘদিনের আবাসন সংকট নিরসনে কোনো নির্দিষ্ট রোডম্যাপ বা কার্যকর পদক্ষেপ না পাওয়ায় এখনই ক্লাসে ফিরছেন না শিক্ষার্থীরা। কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি না মেলায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, কেবলমাত্র প্রতিশ্রুতি নয়—বাস্তবসম্মত ও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া তারা একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না।
কে-৮০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহবুব মোর্শেদ সিয়াম বলেন, “গতকাল আমরা সচিবালয়ে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। সেখানে আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো উপস্থাপন করি। তিনি আমাদের দাবির যৌক্তিকতা স্বীকার করে জানান, দেশের সব মেডিকেল কলেজে ১৯টি নতুন হল নির্মাণের একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে দুটি নতুন হল নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে, যা আগামী একসেক (ECNEC) সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে উত্থাপন করা হবে।”
তিনি আরও জানান, এই আশ্বাস পাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা আপাতত শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি হলের ঝুঁকিপূর্ণ চতুর্থ তলা ছেড়ে নিচতলার তিনটি ফ্লোরে অবস্থান নিচ্ছেন।
তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, এই আশ্বাস যথেষ্ট নয়। কে-৭৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আলফাজ হোসাইন সিহাব বলেন, “কে-৭৮ থেকে কে-৮১ ব্যাচ পর্যন্ত আবাসন সংকট নিরসনে একটি সামগ্রিক পরিকল্পনার কথা বলা হলেও নবাগত কে-৮২ ব্যাচের জন্য কোনো পরিকল্পনার কথা এখনো জানানো হয়নি। আজ আমরা এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসি। তারা জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই পরিকল্পনা জানানো হবে। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত তারা লিখিত এবং নির্দিষ্ট রোডম্যাপ আমাদের সামনে উপস্থাপন না করছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরছি না।”
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে আবাসন সংকটসহ নানা সমস্যার সমাধানে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখে গত ২১ জুন কলেজ একাডেমিক কাউন্সিল এক জরুরি বৈঠকে একাডেমিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করে এবং ২২ জুন দুপুরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়।
তবে শিক্ষার্থীরা সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, তারা কোনো রাজনৈতিক বা উসকানিমূলক উদ্দেশ্যে নয়, বরং নিজেদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় শান্তিপূর্ণ উপায়ে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার কথা জানালেও শিক্ষার্থীদের দৃঢ় অবস্থান এবং আবাসন সংকটের বাস্তবতা সামনে রেখে সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।
repoter




