ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০২:১০ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

আবার অস্থিরতা তৈরির ষড়যন্ত্র চলছে, সতর্ক করলেন মির্জা ফখরুল

repoter

প্রকাশিত: ০৭:৫১:২০অপরাহ্ন , ০৪ আগস্ট ২০২৫

আপডেট: ০৭:৫১:২০অপরাহ্ন , ০৪ আগস্ট ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে, যার লক্ষ্য গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করা। তিনি এই আশঙ্কার কথা প্রকাশ করে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে দেশ আবার গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে ফিরে যেতে পারে।

সোমবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে যুবদল আয়োজিত “জুলাই গণ-অভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়” উপলক্ষে যুব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বক্তব্যে তিনি বলেন, “একটি ষড়যন্ত্র চলছে। একটা চক্রান্ত চলছে দেশে আবার একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করবার। যাতে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ট্রানজিশন সঠিকভাবে না হয়।” তিনি সতর্ক করে বলেন, এই অস্থিরতার উদ্দেশ্য হলো গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে রুদ্ধ করে দেশকে অনির্দেশ্য গন্তব্যে ঠেলে দেওয়া।

তবে তিনি আশাবাদী কণ্ঠে যোগ করেন, “আমরা বিশ্বাস করি, যতদিন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল বেঁচে থাকবে, ততদিন গণতন্ত্র ধ্বংসের কোনো চক্রান্ত সফল হবে না। আমরা আগেও লড়াই করেছি, এখনো করবো।” ফখরুল মনে করেন, এ দেশের জনগণের শক্তি গণতন্ত্রের পক্ষে এবং সেই শক্তির ওপর নির্ভর করেই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।

তিনি বর্তমান সময়কে ‘ট্রানজিশন পিরিয়ড’ বা রূপান্তরের সময়কাল হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, “আমরা এখন এমন একটি পর্যায়ে আছি, যেখানে আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো—ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি ও রাজনৈতিক কাঠামোকে পুনর্গঠন করা।” তিনি মনে করেন, এ সময়কে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে না পারলে ভবিষ্যতেও দেশ গভীর সংকটে পড়তে পারে।

হাসিনা সরকারের সময়ের দুঃশাসনের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা নির্যাতনের মধ্য দিয়ে একটা ভয়ানক সময় পেরিয়ে এসেছি। এখন আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে দেশকে নতুনভাবে গড়ার। অথচ ঠিক এই মুহূর্তেই নানা দিক থেকে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।”

তিনি বলেন, ইতিহাসে বারবার দেখা গেছে, যখনই দেশ বিপর্যস্ত হয়েছে, তখন বিএনপিই সেই দায়িত্ব নিয়ে দেশকে পথে ফিরিয়েছে। এবারও তেমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে এবং বিএনপিকে আবার দায়িত্ব নিতে হতে পারে। তার মতে, বিএনপি এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত।

অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আসুন, আমরা আর কাদা ছোড়াছুড়ি না করি। পারস্পরিক দোষারোপ বাদ দিয়ে দেশের স্বার্থে একত্রে কাজ করি। আমাদের এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ঐক্য, দেশপ্রেম, ও গণতন্ত্রে আস্থা।”

তিনি বলেন, “এই দেশ আমাদের সবার। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, অর্থনীতি পুনর্গঠন করা, এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো—এই লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যদি আমরা একসঙ্গে কাজ করি, তবে দেশকে আবার নতুনভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।”

মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য বিএনপির বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান এবং আগামী দিনের কৌশল সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা দেয়। তিনি যেভাবে গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও ঐক্যের উপর জোর দিয়েছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে বিএনপি নিজেকে শুধু সরকারবিরোধী আন্দোলনের দল হিসেবে নয়, বরং রাষ্ট্রীয় পুনর্গঠনের দায়িত্বশীল শক্তি হিসেবেও তুলে ধরতে চাইছে।

এতে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন আলোচনার সূত্রপাত হতে পারে, যেখানে দলীয় বিভাজনের বাইরে গিয়ে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তবে এই আহ্বানে অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তিগুলো কীভাবে সাড়া দেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

repoter