ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০৩:৪০ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

২০২৩ সালে কর ফাঁকিতে রাজস্ব হারিয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা

repoter

প্রকাশিত: ০৩:২৬:২৫অপরাহ্ন , ২১ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ০৩:২৬:২৫অপরাহ্ন , ২১ এপ্রিল ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

২০২৩ সালে বাংলাদেশ সরকার কর ফাঁকির কারণে আনুমানিক ২ লাখ ২৬ হাজার ২৩৬ কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর সাম্প্রতিক গবেষণায়। সোমবার সিপিডির কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশের উত্তরণে করপোরেট আয়কর সংস্কার’ বিষয়ক এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।

সিপিডির গবেষণায় দেখা যায়, রাজস্ব ঘাটতির এই বিশাল অঙ্কের প্রায় অর্ধেকই করপোরেট আয়কর ফাঁকির কারণে হারিয়েছে। করপোরেট ফাঁকির পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার ১১৮ কোটি টাকা। এই পরিস্থিতিকে দেশের রাজস্ব ব্যবস্থার জন্য এক গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

গবেষণায় আরও উঠে এসেছে যে, কর ফাঁকির প্রবণতা দীর্ঘদিন ধরে বেড়ে চলেছে। ২০১১ সাল থেকে কর ফাঁকির মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১২ সালে ফাঁকির পরিমাণ ছিল প্রায় ৯৬ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা এবং ২০১৫ সালে তা ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকায় পৌঁছায়। ধারাবাহিকভাবে এই প্রবণতা বাড়তে থাকায় সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

সিপিডি কর ফাঁকির পেছনে যে কারণগুলো দায়ী বলে মনে করছে, তার মধ্যে রয়েছে উচ্চ করহার, প্রশাসনিক দুর্বলতা, জটিল আইনি কাঠামো এবং কর ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি। এসব কারণ কর ফাঁকির সুযোগ সৃষ্টি করছে এবং সেগুলো ব্যবহার করে করদাতারা দায় এড়াচ্ছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংস্থার জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী তামিম আহমেদ। খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পথে রয়েছে, যা একদিকে যেমন নতুন সুযোগ এনে দেবে, তেমনি কর সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জও বাড়াবে। এলডিসি পরবর্তী সময় বহুজাতিক কোম্পানির বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে কর ফাঁকি ও কর পরিহারের ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

এই পরিস্থিতিতে কর ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, বিশেষ করে ডিজিটাল অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। কর সংগ্রহের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে এবং কর ফাঁকি প্রতিরোধে সিপিডি একটি শক্তিশালী ও স্বচ্ছ কাঠামো গড়ে তোলার সুপারিশ করেছে।

এছাড়া, কর ফাঁকি ছাড়াও বিভিন্ন কর ছাড় এবং প্রণোদনার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আহরণ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানানো হয়। বিনিয়োগের নামে বিভিন্ন খাতে যে কর ছাড় প্রদান করা হচ্ছে, তা বন্ধ করা উচিত বলে মত দেন সিপিডির এই গবেষক। তিনি বলেন, বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে হলে স্বচ্ছ ও কার্যকর নীতি প্রয়োজন, কর ছাড় নয়।

সিপিডির এই গবেষণাটি দেশের রাজস্ব ব্যবস্থার দুর্বলতা ও সংস্কার প্রয়োজনীয়তার একটি বাস্তবচিত্র তুলে ধরেছে। এটি আগামী দিনে কর প্রশাসনের উন্নয়নে নীতি নির্ধারকদের জন্য দিকনির্দেশনামূলক ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

repoter