ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে অজ্ঞাত পরিচয়ের মরদেহ পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যান্টিন ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারানোদের মরদেহ শনাক্ত করা গেলে তা দ্রুতই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে। সোমবার (২১ জুলাই) সন্ধ্যায় এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, যেসব মরদেহের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব নয়, সেগুলোকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা হবে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নিহতদের মরদেহ যেন মর্যাদার সঙ্গে দ্রুত স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়—সে লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে বলে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমান ঢাকার তেজগাঁও ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যান্টিনের ছাদে বিধ্বস্ত হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) নিশ্চিত করে, এটি একটি প্রশিক্ষণ মিশনের অংশ ছিল। দুর্ঘটনাটি ঘটার পরপরই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং বিকট শব্দে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে।
দুর্ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। এক পর্যায়ে দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের মরদেহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়, যার মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন শিক্ষার্থী ও স্কুলের কর্মচারী।
সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বহু পরিবার তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছে এবং অনেক মরদেহ দগ্ধ অবস্থায় থাকায় তাৎক্ষণিক শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। সেই জন্যই ডিএনএ বিশ্লেষণের পথ বেছে নেওয়া হয়েছে। নিহতদের মরদেহের প্রতি সম্মান জানিয়ে দ্রুততার সঙ্গে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
এই ঘটনার পর সমগ্র দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শোক প্রকাশ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা ও হাসপাতালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকারি বার্তায় বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সকল চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন একযোগে কাজ করছে যাতে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় কোনো ধরণের বিলম্ব না ঘটে এবং নিহতদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান নিশ্চিত করা যায়।
এদিকে ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরাও মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধার কাজ ও তদন্ত চলমান রয়েছে, এবং কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা জানতে বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় গোটা জাতি শোকাহত। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণের সহানুভূতি ও সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে, বিশেষ করে যেন জনসাধারণ গুজবে কান না দিয়ে, নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এবং দুর্ঘটনাকবলিত এলাকা ও হাসপাতালে অহেতুক ভিড় না করে উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রমকে সহযোগিতা করে।
repoter




