
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
২০০৭ সালের এক-এগারো পরিস্থিতির সময় দেশে রাজনীতি থেকে দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে সরানোর নীলনকশা আঁকা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায়, দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় পরে, তারেক রহমানের নাম যুক্ত করে একই ধরনের ষড়যন্ত্র শুরু করেছে দেশের একটি শীর্ষ দৈনিক পত্রিকা। অভিযোগ উঠেছে, দৈনিকটি আবারও মাইনাস টু ফর্মুলা নিয়ে সক্রিয় হয়েছে।
তথ্যমতে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে রাজনৈতিকভাবে ‘ভিলেন’ প্রমাণের জন্য অতীতে পত্রিকাটির পক্ষ থেকে একাধিক চরিত্র হননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এসব অপপ্রচারে তাকে সন্ত্রাস, দুর্নীতি এবং বিত্ত বৈভবের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করে জনমনে নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করার চেষ্টা চালানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, তারেক রহমানকে জঙ্গি সংযোগের সঙ্গে জড়িয়ে অগণিত প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছিল।
২০০৭ সালের এক-এগারোর সময় এই পত্রিকাটি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এক নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল তৃতীয় ধারা প্রতিষ্ঠা করা। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বাদ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের লক্ষ্য ছিল তারেক রহমানকে রাজনীতিতে সম্পূর্ণরূপে ‘মাইনাস’ করা। বিভিন্ন কার্টুন, কলাম ও প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে এই ষড়যন্ত্র তখনো প্রকাশ্যে এসেছিল।
পত্রিকাটির অতীত প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২০০৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত একাধিক প্রতিবেদন ও কলামের মাধ্যমে তারেক রহমানকে দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী এবং বিতর্কিত চরিত্র হিসেবে তুলে ধরা হয়। এমনকি তারেক রহমানের ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোকেও দুর্নীতির অভিযোগে জড়িয়ে সংবাদ ও কার্টুন প্রকাশ করা হয়েছিল।
পত্রিকাটি তারেক রহমানকে নিয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে লিখেছিল, “তারেকের দুর্নীতির বিচার হতে হবে।” এই প্রতিবেদনে তারেক রহমান এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাদের রাজনৈতিক জীবন ধ্বংস করার চেষ্টার আভাস পাওয়া যায়। এ ছাড়া, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমানকে জড়ানোর উদ্দেশ্যে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, যা পরবর্তীতে আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
অভিযোগ রয়েছে, পত্রিকাটি কেবল তারেক রহমান নয়, তার ভাই কোকোর চরিত্র হননেও সক্রিয় ছিল। “কোকো কাহিনি” শিরোনামে একটি কলামে তার সম্পদ নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন ছাপানো হয়, যেখানে কোকোর মাথাকে মানিব্যাগের আদলে দেখানো হয়েছিল।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলার রায়গুলো পর্যালোচনায় দেখা গেছে, অনেক অভিযোগ মিথ্যা ও প্রমাণহীন ছিল। তবে, অভিযোগ রয়েছে যে, এই পত্রিকা এখনো তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
সম্প্রতি, পত্রিকাটির বিরুদ্ধে ইসলামপন্থী একটি পক্ষ তার অফিসের সামনে গরু জবাই করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা দাবি করেছে, পত্রিকাটি ইসলামবিদ্বেষী বার্তা প্রচার করে জনরোষ সৃষ্টি করছে এবং এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এক-এগারোর পুনরাবৃত্তি করে দেশের বৃহৎ দুই দলকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নেই। তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে তাকে বিতর্কিত প্রমাণের যে প্রচেষ্টা প্রথম আলো চালিয়ে যাচ্ছে, তা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য হুমকি।
বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, পত্রিকাটি একের পর এক মনগড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং দলীয় নেতাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। বিশেষ করে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রচারিত সংবাদগুলো বিচারিক রায়ে খণ্ডিত হওয়া সত্ত্বেও নতুন নতুন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
রাজনীতি সচেতন মানুষের মতে, এ ধরনের সংবাদপত্রের কার্যক্রম গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নয়; বরং এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। তারেক রহমান এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে প্রকাশিত এমন অসংখ্য প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এগুলোর উদ্দেশ্য ছিল শুধু একটাই—তাকে রাজনীতিতে ভিলেন বানিয়ে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করা।
শেষমেশ, পত্রিকাটির এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে দেশজুড়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা মনে করছেন, দেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য একটি বিশেষ মহল এমন নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে।
repoter