ঢাকা,  শুক্রবার
৩ অক্টোবর ২০২৫ , ০৩:৩০ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল * ঢাকার বাতাস আজও অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে * ট্রাম্পের আমন্ত্রণে নৈশভোজে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের উপস্থিতি * মালয়েশিয়ায় গ্রেফতার বাংলাদেশিদের জঙ্গিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই: এটিইউ প্রধান * হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন শেহবাজ শরিফ * চাকসু নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ও ব্যালট নম্বর প্রকাশ * মানুষের আস্থা অর্জনই বিচার বিভাগের প্রধান লক্ষ্য : প্রধান বিচারপতি * শাপলা প্রতীকের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেবে না নির্বাচন কমিশন: সিইসি * বাংলাদেশ-ইতালি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে বৈঠক * ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬৬৮ জন

তাইওয়ান বিধ্বস্তের পর চীনে আঘাত হানল টাইফুন রাগাসা

repoter

প্রকাশিত: ০৬:১৫:৩৮অপরাহ্ন , ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আপডেট: ০৬:১৫:৩৮অপরাহ্ন , ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

-সংগৃহীত ছবি

ছবি: -সংগৃহীত ছবি

প্রবল ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর অবশেষে চীনে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী টাইফুন রাগাসা। বুধবার দুপুরে ঝড়টি চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডন প্রদেশের হাইলিং দ্বীপের উপকূলে আছড়ে পড়ে। দ্বীপটি ইয়াংজিয়াং শহরের অন্তর্গত।

চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আঘাত হানার সময় টাইফুনটির কেন্দ্রস্থলে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪৪ কিলোমিটার। প্রচণ্ড বাতাস ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এর আগে রাগাসা প্রথম আঘাত হানে ফিলিপাইনে। সোমবার দেশটিতে ঝড়টি সুপার টাইফুনে রূপ নেয়। ফিলিপাইনে তাণ্ডব চালিয়ে ঝড়টি ক্রমেই তাইওয়ান ও চীনের দিকে অগ্রসর হয়। পথে হংকংয়েও এর প্রভাব পড়ে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি বছর এটাই সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন।

হংকংয়ে ঝড়ের প্রভাবে সড়ক, ভবন ও জনপরিবহন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে অন্তত ৬২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভারি বৃষ্টিপাতে শহরের বহু এলাকা প্লাবিত হয়।

সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাইওয়ানে। বিশেষ করে গুয়াংফু নামের একটি শহরের লেকের বাঁধ ভেঙে তীব্র বন্যা দেখা দেয়। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, এ ঘটনায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ১৭ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাঁধ ভাঙার পর হঠাৎ বন্যার পানিতে বহু বাড়িঘর ও অবকাঠামো তলিয়ে যায়।

তাইওয়ানের প্রধানমন্ত্রী চো জাং-তাই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো সরাসরি পরিদর্শন করেন। তিনি বাঁধ ভাঙা ও বন্যার ঘটনায় হতাহতদের ব্যাপারে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং তদন্তের নির্দেশ দেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী, কেন স্থানীয় মানুষদের আগে থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়নি তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।

এ ঘটনার পর ভাইস প্রেসিডেন্ট হাসিয়াও বি-খিমও দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন। স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দিতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে, চীনে আঘাত হানার পর ঝড়টির কিছুটা দুর্বলতা দেখা গেলেও, এর শক্তি এখনও ছিল যথেষ্ট। তাইওয়ান ও হংকংয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর চীনের উপকূলীয় এলাকাগুলোতেও তা আতঙ্ক ছড়ায়। স্থানীয় সরকার জরুরি সতর্কতা জারি করে জনগণকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে অনুরোধ জানিয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাগাসা ধীরে ধীরে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হবে এবং দুর্বল হতে থাকবে। তবে এর প্রভাবে ভারি বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি রয়ে গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এশিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে ক্রমশ শক্তিশালী ও ঘন ঘন টাইফুন আঘাত হানছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত। রাগাসা তারই একটি সাম্প্রতিক উদাহরণ, যা অল্প সময়ের মধ্যে ফিলিপাইন থেকে তাইওয়ান ও চীন পর্যন্ত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।

বুধবার বিকেলের দিকে ঝড়টি দুর্বল হলেও, এর প্রভাবজনিত ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে তিনটি দেশকেই দীর্ঘ সময় নিতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অবকাঠামোগত ক্ষতির পাশাপাশি মানুষের প্রাণহানি ও নিখোঁজের ঘটনা এ অঞ্চলের জন্য বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি করেছে।

সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি

repoter