ছবি: ছবি: সংগৃহীত
এজবাস্টনে ঐতিহাসিক ইনিংসের পাশাপাশি বিতর্কে জড়ালেন গিল, স্পনসর চুক্তি ভাঙার আশঙ্কা
এজবাস্টনে ভারতের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেন শুভমন গিল। দুই ইনিংসে ৪৩০ রানের অসাধারণ পারফরম্যান্সে তিনি গড়েছেন এক অনন্য ইতিহাস, যা ভারতীয় ক্রিকেটের স্মরণীয় সাফল্যগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে ম্যাচ শেষে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে শুধু তার ব্যাটিং নয়, বরং একটি বিতর্কিত পোশাকঘটিত ঘটনা, যা নিয়ে এখন বিসিসিআইয়ের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে দ্বিতীয় ইনিংস চলাকালীন, যখন ভারত ৪২৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে। ওই সময় ডাগআউট থেকে মাঠে নামতে দেখা যায় গিলকে, যিনি তখন ‘নাইকি’ ব্র্যান্ডের টাইটস পরে ছিলেন। বিষয়টি হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে সবার নজরে পড়েনি, কিন্তু পরে ছবির মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে তা বড় বিতর্কে রূপ নেয়।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই বর্তমানে জার্মান ক্রীড়া সামগ্রী নির্মাতা অ্যাডিডাসের সঙ্গে একটি ২৫০ কোটি টাকার স্পনসর চুক্তিতে আবদ্ধ, যা ২০২৮ সালের মার্চ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এই চুক্তি অনুযায়ী, ভারতীয় জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা শুধুমাত্র অ্যাডিডাসের তৈরি পোশাক ও সরঞ্জাম ব্যবহার করতে বাধ্য। তাই গিলের ‘নাইকি’ ব্র্যান্ডের টাইটস পরা সরাসরি এই চুক্তির শর্ত ভঙ্গের শামিল।
এ বিষয়ে এখনো বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে বোর্ড অভ্যন্তরে আলোচনা চলছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, এবং গিলের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হতে পারে। বিসিসিআই চাইছে বিষয়টিকে বড় করে না তুলে অভ্যন্তরীণভাবে সামলাতে, যাতে অ্যাডিডাসের সঙ্গে বর্তমান চুক্তিতে কোনো রকম টানাপড়েন না সৃষ্টি হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি হয়তো গিলের অনিচ্ছাকৃত ভুল, হয়তো ম্যাচের ব্যস্ততায় বা তাড়াহুড়োয় তিনি বিষয়টি নজরে আনেননি। কিন্তু এমন ভুল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে, বিশেষ করে যেখানে কোটি টাকার চুক্তি জড়িত, সেখানে বড় ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। অ্যাডিডাস চাইলে এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ দাবি করার অধিকার রাখে, যদিও বাস্তবতা বলছে, ভারতের মতো বড় বাজারে বিসিসিআইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করাও অ্যাডিডাসের জন্য সহজ সিদ্ধান্ত হবে না।
তবে বিষয়টি আপাতত মৌখিক সতর্কতা বা ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা দিয়েই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবুও, বিসিসিআই যে এই বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নিচ্ছে, তা বোর্ডের নীরবতা থেকেই অনেকাংশে স্পষ্ট।
গিলের এই ‘নাইকি বিভ্রাট’ বিসিসিআইয়ের জন্য একটি সতর্ক সংকেত হিসেবে এসেছে, বিশেষ করে যখন ব্র্যান্ড ইমেজ ও অর্থনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। এখন দেখার বিষয়, অ্যাডিডাস এ নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া জানায় এবং বিসিসিআই কীভাবে সামলায় এই অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি। গিলের ব্যাটে ভারতের জয় এলেও, তার পায়ে থাকা এক টুকরো পোশাক হয়তো বোর্ডকে এনে দিতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত চাপ।
repoter




