ঢাকা,  শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ , ০৩:৪০ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল * গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, দেশে–বিদেশে উদ্বেগ * ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা, আজ চালু থাকছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র * ৬৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে গতি আনছে সরকার * যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প, সমালোচনার কেন্দ্রে ভেনেজুয়েলা অভিযান * পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত * যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভেনেজুয়েলা অভিযান: মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে * ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন জটিলতা * গুম ও মানবতাবিরোধী অভিযোগে ১৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে * বিএনপির ৪০টির বেশি আসনে মনোনয়নসংক্রান্ত অসন্তোষ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যস্ত সমাধান খুঁজতে

শতকোটি টাকা নিয়ে ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’-এর হঠাৎ গা-ঢাকা: অফিস বন্ধ, মালিক পলাতক

repoter

প্রকাশিত: ০৭:০১:১৬অপরাহ্ন , ০৩ আগস্ট ২০২৫

আপডেট: ০৭:০১:১৬অপরাহ্ন , ০৩ আগস্ট ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

দেশের অনলাইন বিমান টিকিট বুকিং খাতের অন্যতম বড় নাম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেছে। অফিসে গিয়ে কেউ কাউকে পাচ্ছে না, ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাচ্ছে না, আর প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে, শত শত কোটি টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিক দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি এবং বিনিয়োগকারীদের দাবি, তারা ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’-এ বিপুল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। কেউ কেউ বলছেন, প্রতারণার শিকার হয়ে তারা এখন নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

ফ্লাইট এক্সপার্টের সেলস বিভাগের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানান, "গত রাতেই আমাদের মালিক দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। আমরা এখন মতিঝিল থানায় যাচ্ছি মামলা করতে।"

এদিকে, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) সালমান এক অভ্যন্তরীণ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে লিখেছেন, কোম্পানির অন্য তিন শীর্ষ কর্মকর্তা—সাঈদ, হোসাইন এবং সাকিব—তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তিনি দাবি করেন, গত বৃহস্পতিবারের এক বৈঠকে পরিকল্পিতভাবে সব দায় তার কাঁধে চাপানো হয় এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও তাকে দেওয়া হয়নি।

সালমান আরও জানান, শুক্রবার সকালে ওই তিন কর্মকর্তা ৩ কোটি টাকা বা তার চেয়ে কম অর্থ সরিয়ে নিয়েছেন এবং নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছেন। এতে প্রতিষ্ঠানটি কার্যত অর্থহীন হয়ে পড়ে এবং বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতির কারণে আমি ছুটিতে যাচ্ছি। নিজেকে নিরাপদ রাখার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।” তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “এভাবে চলে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না।”

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। অনেকেই লিখেছেন, গত রাতেই প্রতিষ্ঠানটির মালিক দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। অনেকে এই ঘটনায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

ফ্লাইট এক্সপার্টের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সর্বশেষ পোস্ট ছিল হজ ২০২৬ সংক্রান্ত। সেখানে জানানো হয়েছিল, হজ প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এবং রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। এরপর থেকে তাদের কোনো নতুন আপডেট নেই।

জয়িতা আফ্রিন নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “ফ্লাইট এক্সপার্টের মতো ট্রাস্টেড কোম্পানি যদি এভাবে দেশ থেকে পালিয়ে যায় তাহলে আর কাকে বিশ্বাস করব?”

২০১৭ সালের মার্চ মাসে ফ্লাইট এক্সপার্ট আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। একটি লঞ্চ ইভেন্টের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করা এই প্ল্যাটফর্মটি অল্প সময়েই দেশের অনলাইন ট্রাভেল খাতে একটি প্রভাবশালী অবস্থান তৈরি করে।

প্রতিষ্ঠানটি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এয়ারলাইনের টিকিট বুকিংয়ের পাশাপাশি হোটেল রিজার্ভেশন, ট্যুর প্যাকেজ, ভিসা প্রক্রিয়াকরণসহ নানা ধরনের সেবা দিত। বিশেষ করে কম খরচে সহজে ফ্লাইট টিকিট বুক করার সুবিধা থাকায় এটি দ্রুত সাধারণ গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করে।

বিভিন্ন সময় ছাড়, অফার এবং সহজ পেমেন্ট ব্যবস্থা থাকায় এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তবে হঠাৎ করে প্রতিষ্ঠানটির এমন ধস এবং শীর্ষ কর্মকর্তাদের গা ঢাকা দেওয়ার ঘটনায় ট্রাভেল ও ট্যুরিজম খাতে চরম উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

এ ঘটনায় অনেকে প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি।

repoter