ছবি: ছবি: সংগৃহীত
সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত অধিকাংশ ইসরায়েলি কূটনৈতিক কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারকে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জারি করা এই সিদ্ধান্তের পেছনে একটি "গুরুতর নিরাপত্তা হুমকি" কাজ করছে বলে জানিয়েছে দেশটির হিব্রু সংবাদমাধ্যমগুলো।
এই হঠাৎ পদক্ষেপের আওতায় আবুধাবিতে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাস এবং দুবাইয়ে কনস্যুলেট জেনারেলে কর্মরত অধিকাংশ কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জানা গেছে, রাষ্ট্রদূত ইয়োসি শেলি শেষদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত ত্যাগ করবেন।
তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “নিরাপত্তা সংক্রান্ত নির্দেশনা ও ব্যবস্থা নিয়ে মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করে না।”
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এলো যখন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের বিষয়ে সতর্কতা আরও বাড়িয়েছে। ইসরায়েলি ও ইহুদি নাগরিকদের ওপর সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কার কথা জানিয়ে পরিষদ বলেছে, বিশেষ করে ধর্মীয় উৎসব বা ছুটির সময় এই হুমকি বেড়ে যেতে পারে।
জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইরান, হামাস, হিজবুল্লাহ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক জিহাদি সংগঠনগুলো ইসরায়েলি স্বার্থের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা করছে—এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই সর্বশেষ ভ্রমণ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে সংঘাতে ইসরায়েলের সামরিক সাফল্যের পর থেকে শত্রুপক্ষের প্রতিশোধমূলক হামলার ঝুঁকি বেড়েছে। এর পাশাপাশি গাজায় চলমান সংঘর্ষের শুরু থেকেই ইসরায়েলবিরোধী উত্তেজনা ও উসকানিও নজিরবিহীনভাবে বেড়ে গেছে।
বর্তমানে গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনা চলছে। অভিযোগ উঠেছে, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে গাজার জনগণের বিরুদ্ধে "অনাহার অভিযান" চালাচ্ছে। মানবিক সহায়তা বন্ধ ও অবরোধের ফলে সৃষ্ট করুণ চিত্র বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ ও নিন্দার জন্ম দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানরত ইসরায়েলিদের জন্য বেশ কিছু সতর্কতামূলক নির্দেশনা জারি করেছে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ। নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে—সব সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন, হিব্রু ভাষায় লেখা বা ধর্মীয় প্রতীক সম্বলিত পোশাক পরিহার, এবং ইসরায়েল বা ইহুদি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কিংবা জনসমাবেশ থেকে দূরে থাকা।
এ ধরনের সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের কূটনৈতিক অবস্থান ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে এই প্রথম এতো বড় মাত্রার প্রত্যাহার কার্যক্রম পরিচালনা করা হলো। ইসরায়েল-আমিরাত সম্পর্কের ভবিষ্যত এই নিরাপত্তা সংকটে কতটা প্রভাবিত হবে, তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
সূত্র: মিডলইস্ট মনিটর
repoter

