ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, পহেলা আগস্ট শাহবাগে ‘জুলাই যোদ্ধা’দের পক্ষে-বিপক্ষে সংঘর্ষে গোটা জাতি ব্যথিত ও হতাশ হয়েছে। তিনি বলেন, এ ধরণের ঘটনা শুধু কষ্টদায়কই নয়, বরং একটি দীর্ঘ লড়াই ও আন্দোলনের চেতনাকে কলুষিত করে। শনিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চাঁদখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে লাহারকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি নির্বাচনের পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, যারা নিজেদের জুলাই যোদ্ধা দাবি করেন, তাদের মধ্যে সংঘর্ষের মাধ্যমে জাতির সামনে কী বার্তা পৌঁছে দেওয়া হলো? এ ধরনের কার্যকলাপ কি কোনো প্রকৃত আন্দোলনকামী julioy যোদ্ধার হতে পারে? শুধু শাহবাগ নয়, ২০১৮ সালের জুলাই আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ অংশ নিয়েছে, সবাই ছিলো এ আন্দোলনের সহযোদ্ধা। আন্দোলনটি ছিল সার্বজনীন ও স্বতঃস্ফূর্ত, কোনও একক গোষ্ঠীর নয়।
তিনি আরও বলেন, কিছু সংখ্যক তথাকথিত আন্দোলনকারীর হঠকারী কর্মকাণ্ড দেশের মানুষকে ব্যথিত করেছে। এর ফলে যারা গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘ সময় সংগ্রাম করেছেন, তাদের অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ফ্যাসিবাদী শক্তি স্বাভাবিকভাবেই সুযোগ নিতে পারে। এই বিভাজন সরকারবিরোধী আন্দোলনকে দুর্বল করে দেয়।
এ্যানি বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি এবং দেশের জনগণ অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। শেখ হাসিনার শাসনামলে আন্দোলনের সময় শিশুদের উপর হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো হয়েছে, অসংখ্য ছাত্র, তরুণ, নাগরিক নিহত হয়েছেন। বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী গুম, খুন ও হত্যার শিকার হয়েছেন। আন্দোলনের একপর্যায়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। তবে আন্দোলনের সময় সারা দেশের মানুষ ছিল একতাবদ্ধ এবং প্রত্যেকে নিজেদের অবস্থান থেকে সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বিগত এক বছরে অনেক রাজনৈতিক দল এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তাদের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থেকেছেন। অনেকেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের চিন্তা করছেন, কিন্তু তারা আন্দোলনের মূল চেতনা থেকে বিচ্যুত। যারা একসময় কোটা সংস্কার বা মেধা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ছিলেন, তারা এখন রাজনীতিতে ভিন্ন অভিপ্রায়ে সক্রিয় হচ্ছেন। জনগণ এসব কর্মকাণ্ডকে ভালোভাবে নেয়নি।
তিনি অভিযোগ করেন, কিছু ব্যক্তি অতীতে রাজনীতিবিদদের ত্রুটি ধরিয়ে বাহবা কুড়িয়েছেন, নিজেরা মধ্যমণি হিসেবে থাকলেও এখন তারা নিষ্ক্রিয়। জনগণ তাদের থেকে যা প্রত্যাশা করেছিল, তারা তা পূরণ করতে পারেননি।
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, বর্তমানে দেশে যে অস্থিরতা ও নিরাপত্তাহীনতা চলছে, তা প্রমাণ করে প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। দেশের মানুষ আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তিনি বলেন, এই অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন। তিনি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানান।
repoter

