
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির মামলায় অভিযুক্ত হয়ে মগবাজারে ডিবি পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার, আগেই গ্রেফতার হয়েছিলেন নুরুল হুদা
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। আজ বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড গোয়েন্দা-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “ডিবি পুলিশের একটি দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মগবাজার এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানকালে কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং মামলার প্রক্রিয়াগত বিষয়গুলো অনুসরণ করা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তিন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ মোট ২৪ জনকে আসামি করে বিএনপি সম্প্রতি একটি মামলা দায়ের করে। গত ২২ জুন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি করেন (মামলা নম্বর-১১)। মামলায় উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে ‘ভোট কারচুপি, অনিয়ম ও প্রহসনমূলক নির্বাচন’ পরিচালনায় তারা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা এবং কাজী হাবিবুল আউয়াল। এর আগে মামলার অপর একজন আসামি সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদাকে গত ২২ জুন রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরদিন তাকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।
এদিকে হাবিবুল আউয়ালের গ্রেফতার নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন মহল বিষয়টিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে দেখলেও, ডিবি কর্তৃপক্ষ বলছে, “আমরা আইন অনুযায়ী কাজ করছি। তদন্তে যে নাম আসবে বা যাদের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ থাকবে, তাদের বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এখন পর্যন্ত মামলার অন্যান্য আসামিদের বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে ডিবি। মামলার গুরুত্ব ও রাজনৈতিক সংবেদনশীলতার কারণে বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বিএনপি বলছে, “এই মামলা কেবল প্রতীকী নয়, এটি গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আমাদের লড়াইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।” তবে আওয়ামী লীগ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের গ্রেফতার ও মামলার অগ্রগতি আগামী দিনে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
repoter