
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
পুলিশ বাহিনীর হাতে আর কোনও মারণাস্ত্র থাকবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে সাধারণ পুলিশের হাতে কোনো মারণাস্ত্র না থাকে। অস্ত্র বহন ও ব্যবহারের অনুমতি কেবলমাত্র আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যদের হাতে থাকবে, যাদের কার্যক্রম অন্যান্য পুলিশের থেকে আলাদা।
সোমবার (১২ মে) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যক্রম আরও আধুনিক ও মানবিক করার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও জানান, এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) পুনর্গঠন করা হবে। এ লক্ষ্যে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে, যারা র্যাবের কাঠামোগত ও কার্যকরী পরিবর্তনের বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করবে। এই পুনর্গঠনের মাধ্যমে বাহিনীটির পেশাগত দায়িত্ব পালনে আরও স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও জনসেবামূলক মনোভাব নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এছাড়াও তিনি বলেন, দেশের তৈরি পোশাক খাতে কর্মরত শ্রমিকদের ঈদের আগে বেতন ও ভাতা পরিশোধ নিশ্চিত করতে হবে। মালিকপক্ষ যেন এই বিষয়ে কোনরকম গাফিলতি না করে, সে বিষয়ে সরকার সজাগ রয়েছে। তবে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে কোনো অবৈধ দাবি বা আইন বহির্ভূত আচরণ করা হলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরুর হাটে চাঁদাবাজি বন্ধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি হাটে ১০০ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। এই সদস্যরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করে হাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং চাঁদাবাজি প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও জানান, ঈদে যাত্রার সময় যাতে সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সড়কপথে চাঁদাবাজি কিংবা যাত্রী হয়রানির মতো ঘটনাগুলো যেন না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে টহল জোরদার করা হবে এবং প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সহায়তাও নেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য এবং জনগণের আস্থা অর্জনে সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের ভূমিকা আরও মানবিক ও গণমুখী করতে সরকার একাধিক সংস্কারমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। নিরাপত্তা বাহিনীকে জনবান্ধব করে গড়ে তোলার এই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই পুলিশের মারণাস্ত্র বহনের ক্ষমতা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এসব উদ্যোগের ফলে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা আরও দৃঢ় হবে এবং ভবিষ্যতে পুলিশের বিরুদ্ধে অহেতুক শক্তি প্রয়োগের অভিযোগও হ্রাস পাবে।
repoter