ছবি: ছবি: সংগৃহীত
এইচএসসি পরীক্ষায় নকল ও ফাঁস ঠেকাতে নজরদারি জোরদার, ১৫ আগস্ট পর্যন্ত কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে
প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সরকার এবার অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। তিনি বলেন, এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় যাতে কোনোভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস না হয়, সে বিষয়ে সরকার সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৫ জুন) সচিবালয়ে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. আবরার বলেন, “আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, অস্থিরতা রয়েছে। কিন্তু সবকিছুর মধ্যেও আমরা চাই, পরীক্ষা অন্তত সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে অনুষ্ঠিত হোক। অতীতে নানা প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটেছে, এবার আমরা এর পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না।”
তিনি জানান, প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দেশের সব পরীক্ষাকেন্দ্রে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে এবং প্রশ্নপত্র পরিবহনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে। সেই সঙ্গে প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা নকল সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা উপদেষ্টা আরও জানান, “পরীক্ষা সুষ্ঠু, নিরাপদ এবং নকলমুক্ত রাখতে কোচিং সেন্টারগুলো আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে পরীক্ষার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধ এবং পরীক্ষার্থীদের মানসিকভাবে সুরক্ষিত রাখতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমার দায়িত্ব গ্রহণের সময় খুবই সীমিত, কিন্তু এর মধ্যেই আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগ নিতে। আমরা চাই, একটি জ্ঞাননির্ভর সমাজ গড়ে উঠুক, যেখানে সুশিক্ষিত জনগোষ্ঠী দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।”
পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পাশাপাশি প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও সজাগ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। “কোনো পরীক্ষাকেন্দ্রে নকল বা ফাঁসের তথ্য পাওয়া মাত্রই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জেলা প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে,” বলেন ড. আবরার।
এ সময় তিনি নিজেও পরীক্ষার দিন বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন বলেও জানান।
উল্লেখ্য, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ১০টায় বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষার মাধ্যমে শুরু হচ্ছে ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা, যা চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর শুরু হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।
চলতি বছর সারাদেশে ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ ৫৫ হাজার, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষার্থী ৮৬ হাজারের বেশি এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার।
পরীক্ষাগুলো দেশের ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আশাবাদী, এবারের পরীক্ষা কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।
repoter




