
ছবি: -সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশ আজ স্বৈরাচারমুক্ত অবস্থানে পৌঁছেছে অসংখ্য মানুষের আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের ফলেই—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সোমবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষার সংগ্রামে বিএনপি সবসময় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। “অসংখ্য মানুষ তাদের জীবন দিয়েছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাদের সেই আত্মদানের ফলেই আজকের এই স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিএনপি বরাবরই জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে পাশে থেকেছে,” তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির রাজনৈতিক শক্তির মূল উৎস হচ্ছে জনগণ। “জনগণই বিএনপির সকল ক্ষমতার উৎস। আমরা জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের কণ্ঠস্বর রোধ করার যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে বিএনপি অতীতেও আন্দোলন করেছে, ভবিষ্যতেও করবে।”
তারেক রহমান অভিযোগ করেন, জনগণের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার বারবার ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা হয়েছে। তবে বিএনপি জনগণের বিশ্বাসকে শক্তি হিসেবে নিয়ে সামনে এগিয়েছে। তিনি বলেন, “বিএনপি কখনোই ক্ষমতাকে নিজেদের লক্ষ্য হিসেবে দেখেনি। আমাদের লক্ষ্য হলো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।”
ভার্চুয়াল বক্তব্যে তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের নেতাকর্মীদের সাহস ও ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানান। “আপনারা যেভাবে তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের সঙ্গে যুক্ত থেকে বিএনপির সংগঠনকে শক্তিশালী করে চলেছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। সামনে আরও কঠিন সংগ্রাম আসবে, আর সেই সংগ্রামে তৃণমূল নেতাকর্মীরাই হবে বিএনপির প্রধান ভরসা,” তিনি বলেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিএনপির সংগ্রাম কেবল দলীয় স্বার্থে নয়, বরং দেশের মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। “আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না। তাই আমাদের লড়াই জনগণকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে নিতে হবে।”
তারেক রহমান এ সময় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অবদানের কথাও স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যে ভূমিকা রেখেছেন, তার আদর্শই আমাদের পথপ্রদর্শক। আর দেশনেত্রী খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তা ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির এই সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জেলা শাখার নেতারা জানান, দীর্ঘদিন পর সম্মেলনের মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও জোরদার হবে। নতুন নেতৃত্ব গড়ে উঠবে এবং আন্দোলনে নতুন গতি আসবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তারেক রহমান তার বক্তব্যের শেষাংশে বলেন, “জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে আমাদের প্রতিটি নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। অগণিত আত্মত্যাগে অর্জিত এই স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে জনগণের রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে।”
repoter