ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৫ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১২:৫৯ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে লক্ষ্যমাত্রা: ৪-৫ শতাংশে নামানো হবে * কারামুক্ত হলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার * জাতির অস্তিত্ব রক্ষায় ঐক্যের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার * চীনকে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-২১ হকি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ইতিহাস * ইমাম হোসেন তাঈম হত্যা মামলায় যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি গ্রেপ্তার * অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে ধৈর্যের সঙ্গে লড়াই করতে হবে: তারেক রহমান * বিপিএল থিম সংয়ের কিছু লাইন লিখেছেন ড. ইউনূস * ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে একচুলও ছাড় নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তীব্র প্রতিবাদ * দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি * জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস

মুন্সিগঞ্জে এক্সপ্রেসওয়ের পাশে গুলিতে তরুণী নিহত

repoter

প্রকাশিত: ০১:০১:১৯অপরাহ্ন , ০১ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০১:০১:১৯অপরাহ্ন , ০১ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশের সার্ভিস সড়ক থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত তরুণীর নাম সাহেদা আক্তার (২২), যিনি ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালি থানার বেগুনবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তিনি ঢাকার ওয়ারী এলাকায় তার ভাইয়ের সঙ্গে বসবাস করতেন এবং একটি ডে-কেয়ার সেন্টারে কাজ করতেন।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে শ্রীনগরের সমসপুর এলাকার দোগাছি সার্ভিস সড়ক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, নিহতের পিঠে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে এবং লাশের পাশ থেকে কয়েকটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তরুণীকে সেখানেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে নাকি অন্যত্র হত্যা করে মরদেহ সেখানে ফেলে রাখা হয়েছে, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।

ফিঙ্গারপ্রিন্টে শনাক্ত করা যায়নি, ফোন কলের সূত্রে পরিচয় নিশ্চিত

মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) ফিরোজ কবীর জানান, প্রাথমিকভাবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট পরীক্ষা করে পরিচয় শনাক্ত সম্ভব হয়নি। তবে একটি ফোন কলের সূত্র ধরে নিহত তরুণীর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। নিহত সাহেদার মা শনিবার বিকেলে থানায় এসে তার মরদেহ শনাক্ত করেন।

পুলিশ আরও জানায়, সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় শ্রীনগর থানা পুলিশ। পরে পিবিআই এবং ডিবি পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

ভোরে মহাসড়কে হাঁটার পর তরুণীর লাশ উদ্ধার

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, ভোরবেলায় সাহেদাকে এক যুবকের সঙ্গে মহাসড়কে হাঁটতে দেখা যায়। এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর পথচারীরা মহাসড়কে তার গুলিবিদ্ধ মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তবে ওই যুবককে স্থানীয়রা চিনতে পারেননি, এবং তিনি একা ছিলেন নাকি তার সঙ্গে আরও কেউ ছিল, সেটিও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

লাশের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া গুলির খোসাগুলো এবং ঘটনার সময় তরুণীর ফোন বন্ধ থাকায় হত্যাকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট কারণ উদ্ঘাটনে পুলিশ আপাতত তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

মায়ের বরাত: ওয়ারী থেকে বের হওয়ার পরই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

নিহত সাহেদার মা জানান, সাহেদা রাজধানীর একটি বাসায় শিশুদের দেখাশোনার কাজ করতেন। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে তিনি ওয়ারীর ভাড়া বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন দুপুরে পুলিশ থেকে খবর পেয়ে তার মৃত্যু সম্পর্কে জানতে পারেন। তবে তিনি কার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন এবং কেন শ্রীনগরের দোগাছি এলাকায় গিয়েছিলেন, তা তার পরিবার জানে না।

চলন্ত গাড়ি থেকে মরদেহ ফেলার সম্ভাবনা

পুলিশ কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, চলন্ত গাড়ি থেকে সাহেদার মরদেহ ফেলে দেওয়া হতে পারে। তবে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড কিনা বা ব্যক্তিগত কোনো বিরোধের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে কিনা, সেটি নিশ্চিত হতে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আমরা আশপাশের ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং সম্ভাব্য তথ্য-উপাত্ত নিয়ে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করছি।”

অপরাধের পেছনে সম্ভাব্য কারণ অনুসন্ধানে তৎপর পুলিশ

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) আনিছুর রহমান জানান, সাহেদার সঙ্গে থাকা যুবকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের খোঁজ চলছে। পুলিশ তার ওয়ারীর ভাড়া বাড়ি এবং কর্মস্থলের সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি কোনো পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে।

তদন্তে অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ কার্যক্রম

তদন্তকারীরা জানিয়েছে, গুলির খোসা এবং মরদেহের অবস্থান দেখে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে, সাহেদাকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে। মরদেহ ফেলে দেওয়ার সময় হত্যাকারী তাকে চিহ্নিত হওয়ার কোনো সুযোগ রাখতে চায়নি। তবে ঘটনাস্থল এবং এর আশপাশের এলাকাগুলোতে তল্লাশি এবং সম্ভাব্য প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎ গ্রহণের কাজ চলছে।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাহেদার শেষ মোবাইল অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করছে।

সাহেদার পরিবার এবং স্থানীয় জনগণ এ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। তদন্তকারীরা আশাবাদী যে, এই ঘটনার রহস্য দ্রুত উন্মোচিত হবে এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

repoter