ঢাকা, ২৪ ফেব্রুয়ারি – বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হলেও তাদের ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। তারা এখনো দেশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। সোমবার ঢাকার ধামরাইয়ে বিএনপির সমাবেশে তিনি এসব মন্তব্য করেন। ধামরাই পৌরসভার যাত্রাবাড়ি মাঠে আয়োজিত এই সমাবেশে হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমান ও ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। আমরা আগামীতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। ১৫ বছর ধরে হাসিনা সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর যে জুলুম ও নির্যাতন চালিয়েছে, তা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। বিএনপির নেতা-কর্মীদের গুম, খুন ও নির্যাতনের মাধ্যমে সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রেখেছে। এমনকি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কারাগারে রাখা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, তারেক রহমানের নামে ৮৬টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। বিএনপিকে বারবার ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার কেবল নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য নানা কৌশল নিয়েছে। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা একজন নোবেলজয়ী ব্যক্তিকে দেশের নেতৃত্বে দেখতে চাই, যিনি সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে পারবেন। দেশের ছাত্রসমাজ আন্দোলন করে হাসিনার পতন ঘটিয়েছে, কিন্তু তারা এখনো তাদের ভোটাধিকার ফিরে পায়নি। কিছু রাজনৈতিক দল স্থানীয় নির্বাচন চায়, তবে বিএনপি চায় জাতীয় পর্যায়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, শেখ হাসিনা দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সেনাবাহিনী সঠিক সময়ে ভূমিকা পালন করেছে, যার ফলে জনগণ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পেরেছে। আওয়ামী লীগের দুঃশাসন থেকে মুক্ত হয়ে জনগণ তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে মানুষ স্বাধীনভাবে তার ভোট দিতে পারবে।

বিএনপি ভবিষ্যতে একটি সুগঠিত পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বলে জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বিএনপির ৩১ দফা সংস্কারের মধ্যে রয়েছে ‘এক সরকার দুইবারের বেশি নয়’ নীতি, যা দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়ক হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভয়াবহ। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হলে সুশৃঙ্খল আন্দোলন করতে হবে এবং জনগণের সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব সরকারকে দ্রুত একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেন।