ছবি: -সংগৃহীত ছবি
মানবজাতির জন্মের মূল উদ্দেশ্য হলো উদ্যোক্তা হওয়া, চাকরি করা নয়। শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ভবন-২ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, মানুষ কারো চাকরির জন্য জন্মায়নি। বরং তাদের জন্ম হয়েছে নতুন কিছু সৃষ্টি করার, উদ্ভাবন করার এবং সমাজে নিজের অবদান রাখার জন্য। তিনি সকলকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করেন যে, সকলের জন্য এমন সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন যেখানে তারা তাদের উদ্যোগ এবং সৃজনশীলতা প্রয়োগ করতে পারবে।
ড. ইউনূস আরও বলেন, আজকের যুগে মানুষ নানা ধরনের উদ্যোক্তা হিসেবে সমাজে অবদান রাখছে। এর মধ্যে কিছুটা সংরক্ষণ বা তালিকা করা হয়নি, কিন্তু প্রযুক্তির উন্নতি নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলেছে। প্রযুক্তি এখন আমাদেরকে বিশ্বের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে সংযুক্ত করেছে এবং প্রতিটি মানুষকে তার দক্ষতা অনুযায়ী নতুন দিগন্তে পৌঁছানোর সুযোগ দিচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষ তার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারবে। এটি শুধু ব্যবসা নয়, বরং সমাজে নতুন উদ্ভাবন, সেবা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষের সৃজনশীলতা প্রয়োগের সুযোগ তৈরি করবে। প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন যে, এই প্রযুক্তিগত সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে আরও নতুন উদ্যোক্তা সমাজের জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
পিকেএসএফ-এর নতুন ভবনের উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস বলেন, প্রতিটি মানুষের নিজস্ব সক্ষমতা ও আগ্রহ অনুযায়ী পথ তৈরি করা উচিত। সকলকে তাদের প্রতিভা এবং উদ্যোগের ভিত্তিতে সুযোগ দেয়া গেলে সমাজে একটি শক্তিশালী উদ্যোক্তা সংস্কৃতি গড়ে উঠবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, পিকেএসএফ এই নতুন ভবনে এসে নতুন যাত্রা শুরু করবে এবং যুব সমাজের জন্য আরও উদ্ভাবনমূলক উদ্যোগের পথ প্রশস্ত করবে।
ড. ইউনূসের এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো মানুষের সম্ভাবনাকে চিহ্নিত করে তার যথাযথ প্রেরণা ও সুযোগ তৈরি করা। সমাজে উদ্যোক্তা সংস্কৃতি গড়ে তোলা মানে শুধু নতুন ব্যবসা তৈরি করা নয়, বরং শিক্ষার, স্বাস্থ্য, সামাজিক সেবার, পরিবেশ ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নতুন উদ্ভাবন ও উদ্যোগকে উৎসাহিত করা।
তিনি বলেন, নতুন উদ্ভাবন শুধু অর্থনৈতিক বিকাশে সাহায্য করে না, বরং সমাজের দুর্বল ও পিছিয়ে পড়া অংশকে শক্তিশালী করার একটি হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। প্রযুক্তির ব্যবহার করে মানুষ বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত হতে পারলে সমাজের সব স্তরের মানুষের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা সম্ভব।
ড. ইউনূসের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, পিকেএসএফ-এর নতুন ভবনের মাধ্যমে সংগঠনটি শুধু প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাবে না, বরং উদ্যোক্তা চেতনা ও নতুন উদ্যোগের জন্য একটি উদ্ভাবনী কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। এটি যুব সমাজকে নিজের স্বপ্ন ও উদ্যোগকে বাস্তবায়নের জন্য প্রেরণা যোগাবে এবং নতুন উদ্যোক্তাদের পথ প্রশস্ত করবে।
উপসংহারে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সমাজে উদ্যোক্তা চেতনা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তির মাধ্যমে সৃজনশীল উদ্যোগকে এগিয়ে নেওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, পিকেএসএফ নতুন ভবনে এসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে, যেখানে প্রতিটি মানুষ তার ক্ষমতা অনুযায়ী সমাজে নতুন দিশা দেখাবে।
repoter


