ছবি: ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আগুনে দগ্ধ হয়ে নিহত পাঁচজনের পরিচয় ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ উপলক্ষে ঢাকায় সংবাদমাধ্যমকে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান।
সিআইডির ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবের তথ্য অনুযায়ী, মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা ৫টি মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে সিআইডি ১১টি নমুনা সংগ্রহ করে। এই নমুনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ৫ জন কন্যাশিশুর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন ওকিয়া ফেরদৌস নিধি, লামিয়া আক্তার সোনিয়া, আফসানা আক্তার প্রিয়া, রাইসা মনি ও মারিয়াম উম্মে আফিয়া।
সিআইডির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২২ জুলাই উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর সৃষ্ট ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ মরদেহগুলো রাখা হয় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। পরে সিআইডির ডিএনএ বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে গিয়ে অশনাক্ত মরদেহ ও দেহাংশ থেকে মোট ১১টি ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে।
ডিএনএ ল্যাবে এই নমুনাগুলো বিশ্লেষণ করে ৫টি পৃথক ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া যায়, যেগুলো পরে দাবি করা পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে সংগৃহীত ১১টি রেফারেন্স নমুনার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। বিশ্লেষণ শেষে নিশ্চিত হওয়া যায়, প্রতিটি নমুনা কোনো না কোনো পরিবারিক সদস্যের সঙ্গে জেনেটিকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
পরিচয় শনাক্ত হওয়া পাঁচজনের মধ্যে একজন হলেন ওকিয়া ফেরদৌস নিধি, যার পরিচয় পাওয়া গেছে তার বাবা মো. ফারুক হোসেন ও মা সালমা আক্তার দম্পতির দেওয়া রেফারেন্স নমুনার সঙ্গে মিলে। অন্যদিকে, ৬টি নমুনা থেকে পাওয়া আরেকটি প্রোফাইল লামিয়া আক্তার সোনিয়ার সঙ্গে মিলে যায়, যিনি মো. বাবুল ও মাজেদা বেগম দম্পতির কন্যাসন্তান।
সিআইডি জানিয়েছে, বাকি তিনজনের পরিচয়ও একইভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে এবং তাদের নাম আফসানা আক্তার প্রিয়া, রাইসা মনি এবং মারিয়াম উম্মে আফিয়া। তবে তাঁদের পরিবার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
এই বিমান দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩২ জনে পৌঁছেছে এবং আহত ও দগ্ধ অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও বহুজন। দগ্ধদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী, যাদের মধ্যে অনেকে স্কুল চলাকালীন ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন।
ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহ শনাক্ত প্রক্রিয়ায় সিআইডির ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মরদেহের অবস্থা এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যে প্রথাগতভাবে পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব ছিল না। তাই পরিবারের দাবি অনুযায়ী পরিচয় নিশ্চিত করতে বৈজ্ঞানিকভাবে পরীক্ষিত এই পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট পরিবারের সদস্যরা শনাক্ত হওয়া মরদেহ গ্রহণের প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছেন এবং মরদেহ হস্তান্তর ও দাফনের কাজ প্রশাসনের সহায়তায় সম্পন্ন করা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
সিআইডি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, এখনও যেসব মরদেহ শনাক্ত হয়নি, সেগুলোর বিষয়ে ডিএনএ বিশ্লেষণ অব্যাহত রয়েছে এবং পরবর্তী পর্যায়ে আরও মরদেহের পরিচয় প্রকাশ করা হবে।
repoter




